Tuesday, April 16, 2024
HomeBusinessন্যায্য মূল্য না থাকায় হতাশ চাষীরা;ধ্বংসের পথে মহেশখালীর লবণ শিল্প

ন্যায্য মূল্য না থাকায় হতাশ চাষীরা;ধ্বংসের পথে মহেশখালীর লবণ শিল্প

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে পুরোদমে শুরু হলো মহেশখালীর সাদা সোনা খ্যাত লবণ উৎপাদনের মৌসুম। কিন্তু লবণের ন্যায্য মূল্য না থাকায় হতাশ মহেশখালীর লবণ চাষিরা।

ন্যায্য মূল্য

ফলে যে কোনো মুহূর্তে মহেশখালীর লবণ শিল্প ধ্বংস হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা সংশ্লিষ্টদের।

বর্তমানে চাষীরা পুরোদমে লবণ শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের বিষয় এ উৎপাদিত লবণ বিক্রি হচ্ছে  প্রতিমণ মাত্র ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা। সেই হিসাবে ১  কেজি লবণের দাম পড়ে ৩-৪ টাকা। অথচ মহেশখালীর মানুষকে বাজারজাতকৃত তথা প্যাকেট জাতীয় লবণ কিনে খেতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০  টাকা। এতে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় হতাশ চাষিরা।

গত কয়েকদিন ধরে মহেশখালীর বিভিন্ন লবণ চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে লবণের যে দাম সেই দামে লবণ বিক্রি করতে হলে লবণ উৎপাদন ছেড়ে দিতে হবে। মহেশখালীতে উৎপাদিত যে লবণ প্রতি কেজি ৩-৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, সেই লবণ উৎপাদন করতে কেজি প্রতি খরচ হয় ৮-৯ টাকা। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার তথ্যানুযায়ী মহেশখালীতে উৎপাদিত লবণ সারা দেশের মানুষের চাহিদা মিটানে সক্ষম।হোয়ানক কেরুণতলী গ্রামের এক লবণ চাষি বলেন, মহেশখালীর লবণ শিল্পকে বাঁচাতে হলে লবণ চাষিদের ন্যায্য মূল্য দিতে হবে। তা না হলে সে-ই দিন বেশি দুরে না, যেদিন ধ্বংস হয়ে যাবে মহেশখালীর এ লবণ শিল্প।

যখন লবণ উৎপাদনের সময় আসে তখন জমি লাগিয়ত হয় ২০-৩০ হাজার টাকা। পলিথিন বিক্রি হয় পাউন্ড ৬০-৭০ টাকা।এত খরচ বহন করে যখন লবণ উৎপাদন করে তখন ন্যায্য মূল্য পায় না চাষিরা। লবণ উৎপাদনের মৌসুমের সময় টাকা পায় জমির মালিক। জমি লাগিয়ত দিয়ে লবণ উৎপাদন করে তা বিক্রির মাধ্যমে উঠাতে হয় লবণ চাষে বিনিয়োগকৃত টাকা। লবণ মাঠে লবণ বহন করে সংসার চালান হাজারো লবণ শ্রমিক। বর্তমানে লবণের ন্যায্য মূল্য না থাকায় মহেশখালীর হাজার হাজার  পরিবার সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করে যাচ্ছে।

লবণ চাষীদের একটাই দাবি- লবণের ন্যায্য মূল্য না থাকায় উপার্জিত অর্থে মহেশখালীতে লবণ চাষের সাথে সম্পৃক্তরা পরিবারের বরন পোষণের পাশাপাশি সন্তানদের পড়াশোনার খরচ বহন করতে হিমশিম খাচ্ছে।

ন্যায্য মূল্য

চাষিরা অভিযোগ করে বলেন, মহেশখালীর সন্তান সরকারি দলের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির একজন। কিন্তু মহেশখালীর লবণ শিল্প নিয়ে তার কোনো মাথা ব্যাথা নেই। স্হানীয় সাংসদ সহ জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন সময় সভা, সেমিনারে, কিংবা নির্বাচনী জনসভায় লবণের ন্যায্য মূল্য নিয়ে বড় বড় গলায় কথা বলে মাঠ গরম করে আশার বাণী শুনিয়ে জনগণকে ধোঁকা দিয়ে নির্বাচিত হলেও লবণ শিল্প নিয়ে তারা নির্বাচনের পর দু’কথাও বলে না। এমতাবস্থায় লবণ চাষিরা যদি ন্যায্য মূল্য না পায় মহেশখালীর ঐতিহ্য লবণ শিল্প ধ্বংস হতে বেশি সময় লাগবে না।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী সহ স্হানীয় সাংসদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চাষিরা বলেন, বাইরের দেশ থেকে লবণ আমদানি বন্ধ করে দেশে উৎপাদিত লবণের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করে মহেশখালীর হাজারো লবণ চাষির ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানো হোক।

 

লবণ শিল্প নিয়ে লেখা প্রথম প্রতিবেদনটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Related News

5 COMMENTS

Comments are closed.

- Advertisment -

Popular News

error: Content is protected !!