পেকুয়া প্রতিনিধিঃ
পেকুয়ার ব্যবসায়ী রিদুয়ানুল হকের সাথে এনজিও কর্মী রোজিনা বেগমের প্রেম। প্রেম-ভালোবাসা, ভালোলাগা থেকে বিয়ে পর্যন্ত গড়ানোর আগেই মাঝখানে চলে আসে তৃতীয় পক্ষ রেজাউল করিম।
সময়ের ব্যবধানে প্রেমিকা রোজিনাও দ্বিতীয়বার মন দিয়ে বসে রেজাউল করিমকে। সময়ের বব্যধান, কালের বিবর্তনে বিয়ের পথেই এগোচ্ছিলেন রেজাউল-রোজিনা জুটি।
বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না প্রথম প্রেমিক রিদুয়ান। প্রেমিক রিদুয়ান ক্ষোভে বশবর্তী হয়ে রোজিনার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি প্রকাশ করে দেয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। এতেই বাঁধে বিপত্তি। রোজিনাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান দ্বিতীয় প্রেমিক রেজাউল।
রাগে অপমানে আত্মহত্যা করেন প্রেমিকা রোজিনা। প্রেমিকার আত্মহত্যার খবর পেয়ে প্রথম প্রেমিক রিদুয়ানও একই পথ বেছে নেন। পৃথিবীকে জানান চির বিদায়।
ত্রিভুজ আকৃতির প্রেমের এই গল্প কোন নাটক-সিনেমার নয়। কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বাস্তব ঘটনা এটি।
১৫ অক্টোবর (শুক্রবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিষাক্ত ট্যাবলেট (ইঁদুরের বিষ) খেয়ে আত্মহত্যা করেন রোজিনা বেগম (২০)। এর আধাঘন্টা পরে একইভাবে আত্মহত্যা করেন রিদুয়ানুল হক (২২)।
নিহত রোজিনা বেগম উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের পেকুয়ারচর এলাকার নুরুল বশরের মেয়ে এবং রিদুয়ানুল হক পাশের ইউনিয়ন মগনামার মটকাভাঙ্গা এলাকার মৃত ছৈয়দ নুরের ছেলে।
রোজিনা একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি করতেন। রিদুয়ান ছিলেন স্থানীয় সোনালী বাজারের ব্যবসায়ী।
রোজিনার দ্বিতীয় প্রেমিক রেজাউল করিম একই উপজেলার সদর ইউনিয়নের নন্দীর পাড়া এলাকার মৃত ফজল করিমের ছেলে। রেজাউল উজানটিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত।
রোজিনার মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম শহিদুল ইসলাম চৌধুরী।
স্থানীয় বাসিন্দা ও নিহত রোজিনার স্বজনরা জানান, রোজিনা বেগমের সাথে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মেহেরনামা এলাকার রেজাউল করিম নামের এক যুবকের বিয়ে ঠিক হয়। আগামী সপ্তাহে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে বরপক্ষ রোজিনার সঙ্গে পাশের গ্রামের রিদুয়ানের সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারে। এই ইস্যুতে বিয়ে করতে অপারগতা জানান রেজাউল। এতে রাগে অপমানে শুক্রবার সকালে রোজিনা বিষাক্ত ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এ সময় তাকে উদ্ধার করে পেকুয়ার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রিদুয়ানের ভাই মোঃ হোছাইন বলেন, রিদুয়ানের সঙ্গে একটা মেয়ের সম্পর্কের ব্যাপারে জানতাম। এই মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে সেও বিষাক্ত ট্যাবলেট খেয়ে ফেলে। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়।
এদিকে অপর প্রেমিক রেজাউল করিমের ভাই নেজাম উদ্দিন বলেন, উজানটিয়ার একটা মেয়ের সঙ্গে রেজাউলের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। পরে বিয়েটি সে নিজেই ভেঙে দেয়।
এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।