Home Technology নিকটাত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে হলে সন্তানের যেসব ঝুঁকি বাড়ে

নিকটাত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে হলে সন্তানের যেসব ঝুঁকি বাড়ে

0

ডাক্তার সাঈদ সুজনঃ

বিশ্বব্যাপী প্রায় ১ বিলিয়ন জনগোষ্ঠীতে নিকটাত্মীয়ের মধ্যে বিবাহের প্রথা রয়েছে। যেখানে প্রতি ৩ টি বিয়ের ১ টি ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের মধ্যে হয়ে থাকে।

বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় নিকটাত্মীয়ের মধ্যে এ ধরনের বিয়ে বেশি ঘটে।

বিশেষ করে- বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে। এসব বিয়ে শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে বেশি হয়, এসব জায়গায় বাল্যবিবাহের আধিক্যও বেশি।

প্রথম পর্যায়ের বা (First degree relative) মানে আপন চাচাতো, মামাতো, খালাতো, ফুফাতো ভাই-বোনের মধ্যে বিয়ে।

কাজিন ম্যারেজের কারণে জন্ম নেওয়া সন্তানের মধ্যে নানা বংশগত রোগের ঝুঁকি বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। বিশেষত জিনবাহিত বংশধারার রোগগুলোর প্রকোপ এতে বাড়ে।

বলা হয় ফার্স্ট কাজিনদের জীনগত মিল অনেক বেশি অর্থাৎ তারা বংশপরম্পরায় অনেক জীন একইভাবে বহন করেন। অসুস্থ জিনগুলোর কার্বন কপি যখন মা-বাবা দুই বাহক থেকে সন্তানে বাহিত হয়, তখন তা তীব্র আকারে প্রকাশ পায়।

Autosomal Recessive Disease গুলো হয় যদি একই রকমের ত্রুটি পূর্ণ ক্রোমোজোম একসাথে মিলে যায়। সেই মিল হওয়ার সম্ভাবনা নিকটাত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে হয়ে মিল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুণ।

এখানে জেনে রাখা ভালো- Pathology তে রোগের Severity নিয়ে দুইটা শব্দ প্রচলিত।

তা হলো- Disease Penetrance and Disease Expressibility
অর্থাৎ রোগের ভেদ্যতা ও সিম্পটম প্রকাশের ক্ষ্মতা। এই দুই বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে Autosomal Recessive রোগ গুলোর Penetrance & Expressibility প্রায় ১০০%।

নিকটাত্মীয়ের মধ্যে বিয়ের কারণে সন্তানের যেসব ঝুঁকি বাড়ে তা হলোঃ

১. গর্ভপাত মৃত সন্তান প্রসব
২. শারীরিক ত্রুটি সংবলিত শিশুর জন্ম স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ গুণ বেশি হয়।
৩. প্রথম বছর বয়সে শিশুর অস্বাভাবিক মৃত্যু।

৪. হঠাৎ অজানা কারণে শিশুমৃত্যু
৫. যথাযথভাবে শিশু বৃদ্ধি না হওয়া।
৬. শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা।
৭. মৃগী রোগ।
৮.নানা রকমের রক্তরোগ যেমন- থ্যালাসিমিয়া, সিকল সেল ডিজেজ, সিস্টিক ফাইব্রোসিস ইত্যাদি।

বাংলাদেশে এমনিতেই থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক বেশি, হিমোগ্লোবিন ই ডিজিজের বাহকও কম নয়। নিকটাত্মীয়ের বিয়েতে এ ধরনের রোগ নিয়ে সন্তান জন্ম নেওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।

যুক্তরাজ্যের ব্র্যাডফোর্ড শহরে বসবাসকারী পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা যায়, নিকটাত্মীয়ের মধ্যে বিয়ের ফলে জন্মগ্রহণকারী সন্তানের জীনগত অস্বাভাবিকতার হার এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি সাধারণ শিশুদের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি।

যেসব পরিবারে জন্মগত বিভিন্ন রোগের ইতিহাস আছে, সেখানে আত্মীয় বিয়ের ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকা উচিত।

সৌজন্যেঃ (মেডিকেল স্কলার (Medical Scholar) গ্রুপ)

error: Content is protected !!
Exit mobile version