Home Technology চ্যাটজিপিটি ’র কারণে যা হতে যাচ্ছে

চ্যাটজিপিটি ’র কারণে যা হতে যাচ্ছে

0
‘চ্যাটজিপিটি’ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের বিকল্প হতে যাচ্ছে?
‘চ্যাটজিপিটি’ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের বিকল্প হতে যাচ্ছে?

চ্যাটজিপিটি’র জনপ্রিয়তা কারণে জিমেইল’র প্রতিষ্ঠাতা পল বুসেট তার টুইটার বার্তায় বলেন, আগামী ২ বছরের মধ্যে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স নির্ভর অনলাইন চ্যাটবটগুলোর কারণে সার্চইঞ্জিন গুগলের ব্যবসার ক্ষতি হবে।
ChatGPT ‘লেবেল থ্রি’ পর্যায়ের ইঞ্জিনিয়ারের কোডিং পজিশনের জন্যে ১৮৩ হাজার মার্কিন ডলারের চাকুরীতে পাস করেছে। ‘লেবেল থ্রি’ টেক জায়ান্ট কোম্পানি ‘গুগল’র Entry Level Engineering টিম’র চাকুরী। আর ‘গুগল’র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া মূলত প্রযুক্তিগত প্রশ্নের উত্তরের ওপর নির্ভর করে, আর এতে ‘ChatGpt’ সফলভাবে পাস করে।

চ্যাটজিপিটি’র কারণে চাকুরী যাচ্ছে?

এইজন্যে প্রশ্ন উঠছে, ‘OpenAI ChatGPT’ পাঁচ কিংবা ২০ বছর পরে ইঞ্জিনিয়ারিং চাকুরীর প্রশ্নগুলোর জন্যে যথোপযুক্ত হবে? এন্ট্রি লেবেলের চাকুরীগুলো জন্যে চ্যাটজিপিটি চাকুরী প্রত্যাশীদের জন্যে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে যাচ্ছে। গুগলের সাম্প্রতিক এক গবেষণা’তে উঠে আসে যে, চ্যাটজিপিটি কোড’র ভুলগুলো নির্ধারণ করতে পারে; এবং শিল্পী, সাংবাদিক, ও ব্যবসায়ীরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স’র কারণে ভবিষ্যতে অস্তিত্ব সংকটে পরতে পারে। ‘Reddit’র মতন সোশ্যাল কমিউনিটি’তে হাজার হাজার পোস্ট এই সম্পর্কিত পরে, যাতে উঠে আসে ইঞ্জিনিয়াররা ‘চ্যাটজিপিটি’ ব্যবহার করা শুরু করেছে তাদের সময় বাঁচাতে, বিশেষ করে স্টকওভাফ্লো’র জনপ্রিয় সাইটগুলোতে কোডিং সমাধান সার্চ করাতে।

সিএনবিসি’র রিপোর্ট অনুযায়ী, গুগল বেশকিছু আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স নির্ভর চ্যাটবট সাম্প্রতিক সময়ে টেস্ট করেছে। আর এতে চ্যাটজিপিটি’র একটি প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত, সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিশ্বস্ত উত্তর খুঁজে ব্যবহারকারীদের সময় বাঁচানোর ক্ষমতা রয়েছে বলে উল্লেখ হয়েছে।

 

চ্যাটজিপিটি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের বিকল্প হতে যাচ্ছে?

তাহলে কি আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স নির্ভর ‘চ্যাটজিপিটি’ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের বিকল্প হতে যাচ্ছে? না ! ‘চ্যাটজিপিটি’ একটি টুল, যা কিছু সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারে; কিন্তু সম্পূর্ণভাবে সৃষ্টিশীলতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা এবং জটিল চিন্তা-ভাবনার দক্ষতা বিশেষ করে একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের মতন চিন্তা করার ক্ষমতা ‘ChatGPT’র নেই এবং বিকল্প নয়।

এই ব্যাপারে সম্প্রতি বাংলাদেশের বিখ্যাত সুমিত সাহা তার ফেসবুক ওয়ালে একটা সুন্দর পোস্ট করেছেন যেখানে তিনি বলেছেন –

একটা সময় ছিল যখন ইন্টারনেটে সবাই SEO নিয়ে মাতামাতি করতো। তার আগে ছিল Social Media Boom, তারও আগে ছিল Mobile Apps Revolution। এখন সেই জায়গাটা দখল করেছে AI।
চারদিকে শুধু এআই, এআই, আর এআই। কারো মাথায় ঢুকুক বা না ঢুকুক – এটাই যেন নতুন ধর্ম! অথচ, আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি – AI দিয়ে কিছু করলেই যেন গালাগাল একটাও মাটিতে পড়েনা।
আমার একটা ভিডিওর ইংরেজি ভার্সন বানিয়েছিলাম নিজের ভয়েস ক্লোন দিয়ে – দেখলাম সবাই বলছে, “ইহ এটা তো রোবটের মতো লাগছে!” Reddit-এ এক ডেভেলপারের প্রশ্নে AI দিয়ে হেল্প করতে গিয়েছিলাম, গালি দিয়ে বের করে দিল। ইউটিউব-ফেসবুকে এআই জেনারেটেড থাম্বনেইল দিলাম, রিচ তো দূরের কথা, কমেন্টে ধিক্কার! এমনকি কাস্টোমার সার্ভিসে বট দিয়ে রিপ্লাই দিলে কাস্টোমার রীতিমতো চিৎকার করে বলে – “ব্র্যান্ড হয়েও মানুষ না রেখে বট দিয়ে উত্তর দিস?”
তাহলে প্রশ্ন হলো – AI দিয়ে বানানো কনটেন্ট আসলেই কি মানুষ গ্রহণ করছে?
আমি দেখি না করছে। বরং প্রতিবার যেটাই করবো – AI এর ব্যাকআপে কিছু করলে, রেজাল্ট মাইনাসে গিয়েই দাঁড়ায়। অথচ আশেপাশে সবাই এমন একটা ভাব নিচ্ছে, যেন AI আসছে আমাদের সব কাজ কেড়ে নিতে। “Developer লাগবে না, Designer লাগবে না, Writer লাগবে না, Editor লাগবে না” – এইসব কথা এখন রাস্তার মোড়ের চায়ের দোকান থেকেও শোনা যায়।
আসল কথা হলো – এই “AI-everything” এর পেছনে একটা narrative সেট করে দেওয়া হচ্ছে। কে করছে? যারা AI বেচে খাচ্ছে তারাই। ব্যাপারটা অনেকটা আমাদের ভার্সিটির এক ঘটনার মতো।

তিনি আরও বলেন –

“AI তো সবই পারে। তুমি কেন কষ্ট করছো?”
এই বলে যারা প্রচার করছে, তারাই AI টুল বানিয়ে আমাদের ইনফরমেশন, সময় আর ডেটা চুষে নিচ্ছে।
যদি মানুষের চিন্তা করার অভ্যাসটাই চলে যায়, যদি ব্রেইন খাটানোই না লাগে, যদি ক্রিয়েটিভ কষ্ট করাটাকেই সবাই avoid করতে শেখে – তাহলে আমরা কাদের উপর দাঁড়িয়ে একটা সমাজ বানাবো?
AI আমাদের সহকারী হোক – এটাই কাম্য। কিন্তু AI আমাদের জায়গা দখল করে বসে থাকুক – এই ফাঁদে পা দেওয়া মানেই নিজের মগজটা বন্ধক দেওয়া।
একটা কথা মনে রাখুন – AI কখনোই মানুষকে রিপ্লেস করতে পারবে না, যদি না মানুষ নিজেকে নিজেই রিপ্লেস করে দেয়।

তাহলে দিন শেষে যেটা দেখা গেলো AI আসলে কখনো একজন মানুষকে রিপ্লেস করতে পারবেনা। তবে হ্যাঁ এটা যেহেতু কিছু কাজ সহজ করে দিচ্ছে এবং এটা দিয়ে অটোমেশন করে কিছু কাজ করা যাচ্ছে তাই ধারণা করা যায় এটা ব্যবহার করে কিছু সময় বাঁচানো যাবে বৈ আর কিছু না।

error: Content is protected !!
Exit mobile version