Home Agricultural ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি – ক্যাপসিকাম একটি জনপ্রিয় সবজি

ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি – ক্যাপসিকাম একটি জনপ্রিয় সবজি

3
ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি
ক্যাপসিকাম

ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি

ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচ একটি জনপ্রিয় সবজি। ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি বাংলাদেশেও  জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এর আকার আকৃতি বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তবে সাধারণত ফল গোলাকার ও ত্বক পুরু হয়। এটি আমাদের দেশের প্রচলিত সবজি না হলেও ইদানিং এর চাহিদা প্রসারিত হচ্ছে। তবে সারা বিশ্বে টমেটোর পরই দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সবজি হচ্ছে মিষ্টি মরিচ।

আসুন জেনে নিই কিভাবে ক্যাপসিকাম চাষ করা হয়-

 

মাটি নির্বাচনঃ

মিষ্টি মরিচ চাষের জন্য দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি ভালো।মিষ্টি মরিচ খরা ও গোড়ায় পানি জমা কোনটি সহ্য করতে পারে না।

বেড তৈরিঃ

বীজ বপনের ৭-১০ দিন পর চারার ৩-৪ পাতা হলে মাঝারি আকারের পলিথিন ব্যাগে চারা স্থানান্তর করতে হবে।এরপর মূল জমি চাষ ও মই দিয়ে ভালোভাবে তৈরি করে নিতে হবে। এরপর বেড তৈরি করে নিতে হবে। প্রতিটি বেড চওড়া ২.৫ ফুট রাখতে হয়। সাধারণত ৩০দিন বয়সের চারা তৈরি করা বেডে ১.৫ ফুট দূরে দূরে লাইনে রোপন করা হয়। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত রাতের তাপমাত্রা অনেক কমে যায় বলে পলিথিনের ছাউনি দিয়ে রাখলে ভেতরের তাপমাত্রা বেশি থাকে।

বীজ বপণঃ

ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচের বীজ বপনের উপযুক্ত সময় অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত। প্রতি শতকের জন্য ১গ্রাম বীজ দরকার হয়।বীজ থেকে প্রথমে চারা তৈরি করে নিতে হয়।এ জন্য বীজ গুলো কে ১২ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে আগে থেকে তৈরি করে রাখা বীজতলায় ১০ সে.মি. দূরে দূরে লাইন করে বীজ বুনতে হবে।

ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি তে সার প্রয়োগঃ

প্রতি শতক জমির জন্য গোবর ৪০ কেজি, ইউরিয়া ১ কেজি, টিএসপি ১.৪ কেজি, এমওপি ১ কেজি, দস্তা ২০ গ্রাম এবং জিপসাম ৪৫০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হয়। এর মধ্যে অর্ধেক গোবর সার জমি তৈরির সময়, বাকি অর্ধেক গোবর সম্পূর্ণ টিএসপি, দস্তা, জিপসাম,১/৩ ভাগ এমওপি এবং ১/৩ ভাগ ইউরিয়া চারা রোপনের গর্তে প্রয়োগ করতে হবে। বাকি ২/৩ ভাগ ইউরিয়া এবং এমওপি  পরবর্তীতে দুই ভাগ করে চারা রোপণের ২৫ এবং ৫০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে।

সেচ ব্যবস্থাপনাঃ

ক্যাপসিকাম খরা ও জলাবদ্ধতা কোনটাই সহ্য করতে পারে না, তাই প্রয়োজন অনুসারে জমিতে সেচ দিতে হবে। কোনো গাছে ফল ধরা শুরু হলে খুঁটি দিতে হবে,যাতে গাছ ফলের ভারে হেলে না পড়ে। জমি সব সময় আগাছা মুক্ত রাকতে হবে।

ফসল সংগ্রহঃ

মিষ্টি মরিচ পরিপক্ব সবুজ অবস্থায় লালচে হওয়ার আগেই মাঠ থেকে উঠানো যায়।সাধারণত সপ্তাহে একবার গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। ফসল  সংগ্রহের পর ঠান্ডা অথবা ছায়াযুক্ত স্থনে বাজারজাতকরনের পূর্ব পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হয়। তবে ফল সংগ্রহের সময় প্রতিটি ফলে সামান্য পরিমাণে বোটা রেখে দিতে হবে।

রোগ-বালাইঃ

মিষ্টি মরিচে কিছু পোকামাকড় ও রোগের আক্রমণ হয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে জাবপোকা, থ্রিপস পোকা, লালমাকড়, অ্যানথ্রাকনোজ রোগ, ব্লাইট রোগ ইত্যাদি।

এসব রোগের আক্রমণ হলে নিকটস্থ কৃষিকর্মীর সঙ্গে পরামর্শ করে অনুমোদিত বালাইনাশক প্রয়োগ করতে হবে।

ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচের পুষ্টিমান ও ব্যাবহারঃ

পুষ্টিমানের দিক থেকে মিষ্টি মরিচ একটি অত্যন্ত মূল্যবান সবজি। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকার কারণে এবং অতি সহজেই টবে চাষ করা যায় বলে দেশের জনসাধারণকে মিষ্টি মরিচ খাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে।

 

আয়েশা আক্তার,

ডিপ্লোমা ইন এগ্রিকালচার (ষষ্ঠ পর্ব), এগ্রিকালচার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

আমার অন্যান্য পোস্ট সমূ পড়তে চাইলে নিচে লিংক গুলোতে ক্লিক করুন-

3 COMMENTS

Comments are closed.

error: Content is protected !!
Exit mobile version