কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর পাহাড়ি অঞ্চলেই হচ্ছে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উন্নত জাতের উচ্চ ফলনশীল রেড লেডি পেঁপে চাষ Red lady papaya cultivated.
What is Red lady papaya?
তাইওয়ানের বামন প্রজাতির পেঁপে এর প্রকারভেদ এর মধ্যে এটি একটি যার নাম রেড লেডি পেঁপে যা ইংরেজিতে Red lady পাপায়া এবং বৈজ্ঞানিক নাম Carica Papaya
পেঁপে চাষে ধনীঃ
উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের শুকরিয়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষিত যুবক তরুণ উদ্যোক্তা নেজামুল করিম সফল এখন পেঁপে চাষে।
How do you take care of a red lady papaya?
পড়ালেখা শেষ করে বেকারত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়ানো যুবক চাকরির আশা ছেড়ে দিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে নেমে পড়েন চাষাবাদে। প্রায় এক একর জমিতে তাইওয়ানের উন্নত জাতের উচ্চ ফলনশীল বামন প্রজাতির পেঁপে (Red lady papaya) চাষ করে পেয়েছেন সফলতা।
এখন শত-সহস্র ফলবতী পেঁপের সৌন্দর্য হাসিতে হাসছেন বড় মহেশখালীর তরুণ এ-ই উদ্যোক্তা নেজামুল করিম।
৬ মে (বুধবার) সকালে বড় মহেশখালীর শুকরিয়া পাড়া গ্রামের পূর্ব পাশে পাহাড়ি অঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচ-ফুট উচ্চতার প্রতিটি গাছেই গুচ্ছাকারে ধরে আছে হাজার হাজার পেঁপে (Red lady papaya)। যেদিকে চোখ যায় শুধু পেঁপে আর পেঁপে। ৫ জন শ্রমিক নিয়মিতভাবে দৈনিক শ্রমসেবা দিয়ে যাচ্ছেন এখানে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ গ্রহণে এমন সফলতা পেয়েছেন বলে জানিয়ে মহেশখালী ট্রিবিউন কে বলেন,
অনার্স-মাস্টার্স পর্যন্ত পড়ালেখা শেষ করে চাকরির আশায় বেকারত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর পর হঠাৎ উদ্যোক্ত হওয়ার চিন্তা মাথায় আসে। বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের নিয়তে নেমে পড়ি পেঁপে চাষে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে এক একর জমিতে তাইওয়ানের উন্নত জাতের উচ্চ ফলনশীল বামন প্রজাতির পেঁপে (Red lady papaya) চাষ করে এখন সফল।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে এমন সফলতার দেখা পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
রেড লেডি হাইব্রিড পেঁপে চাষে সফল নেজামুল করিম আরও বলেন,
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে নিজের স্বদিচ্ছা এবং বড় মহেশখালী ইউনিয়নের কৃষি ব্লকে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (SAAO) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের অনুপ্রেরণায় এক একর জমি বর্গা নিয়ে জমিতে পেঁপে চাষ শুরু করি।
তারপর কিছুদিন পরে আমার পেঁপে গাছগুলোতে যখন ফলন আসা শুরু করে তখন হঠাৎ করে মোজাইক ভাইরাস (Mosaic virus) রোগে আক্রমণে পেঁপে গাছগুলো দ্রুত শুকিয়ে যেতে থাকে। পরে বিভিন্ন জনে পরামর্শ দেয় আক্রান্ত গাছগুলো কেটে ফেলতে।
এ খবর পেয়ে আমার কাছে ছুটে আসেন বড় মহেশখালী ইউনিয়নের কৃষি ব্লকে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। তিনি বাগানে ছুটে এসে গাছ না কেটে রোগনির্মূল করার পরামর্শ দেন। তারপর থেকে ধীরে ধীরে পেঁপে ভাইরাস দূর হয়ে গাছগুলো প্রাণে বাঁচে।
সরেজমিন পেঁপে বাগানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি গাছে ৩০/৩৫ টি করে পেঁপে রয়েছে এবং পাকা শুরু হয়েছে। চলতি মাসের শেষের পাকা পেঁপে বাজারজাত করতে পারবেন বলে আশাবাদি তরুণ উদ্যোক্তা নেজামুল করিম।
পেঁপে বাগানে সবচেয়ে বেশি রোপণ করা হয়েছে ‘রেডলেডি’ পেঁপে। এটি তাইওয়ানের উন্নত জাতের উচ্চ ফলনশীল বামন প্রজাতির পেঁপে। আকারে গোলাকার। তারপর রয়েছে শাহী ইন্ডিয়ান। আকারে বড় এবং লাউয়ের মতো লম্ব।
উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, পেঁপে চাষাবাদ অন্য সবজি থেকে অধিকতর কঠিন। এটি উৎপাদন স্পর্শকাতর সবজি। তবে তরুণ উদ্যোক্তা নেজামুল করিমের প্রবল আগ্রহ আর কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে পেঁপেতে সফলতা লাভ করে নিজে ভাগ্যবদল করেছেন।এলাকায় এখন তিনি অনুকরণীয় উদ্যোক্তা।
পেঁপে চাষে আগ্রহীদের করণীয় সম্পর্কে এ কর্মকর্তা বলেন,
প্রথমত পেঁপে চাষে উঁচু জমি নির্বাচন; কারণ নিচে পানি জমে গেলে পেঁপে কখনোই হবে না। দ্বিতীয়ত, কৃষকের অধিক আগ্রহ ও কঠিন পরিশ্রম করার ইচ্ছাশক্তি।
কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনে আধুনিক কলাকৌশল ও পরিচর্যা সম্পর্কে আগ্রহ থাকতে হবে। প্রায় দুই সপ্তাহ যদি তিনি বে-খেয়ালী হন তাহলেই বাগান শেষ। আর কঠিন পরিশ্রম করার ইচ্ছাশক্তি অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
আগ্রহী কৃষক, চাষি, উদ্যোক্তাগণ যদি স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শক্রমে পেঁপে চাষ করে, অধিকতর লাভজনক করা সম্ভব বলেও জানান উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।
চলমান………….২