Thursday, April 25, 2024
HomeNewsঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তান্ডব;ছবি তুলে কি হবে?সরকারকে একটি ঘর দিতে বলেন

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তান্ডব;ছবি তুলে কি হবে?সরকারকে একটি ঘর দিতে বলেন

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ভেঙে যাওয়া ভাঙা ঘরের পাশে বসে বিলাপ করে কান্না করছেন বিধবা রোজিনা বেগম। তার ভেঙ্গে যাওয়া ঘরের ছবি তুলতে গেলে বলেন, ‘ছবি তুলে কি হবে, সরকারকে একটা ঘর দিতে বলেন’। তাহলে ৩ টি ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে ঘরে থাকতে পারব, না হয় কোথায় থাকব জানিনা।

সরেজমিনে গিয়ে তার সাথে কথা হয় মহেশখালী ট্রিবিউন’র এই প্রতিবেদকের সাথে। বিধবা রোজিনা বেগম কক্সবাজারের মাতারবাড়ীর বেড়িবাঁধের পাশে জরাজীর্ণ ঘরে থাকতেন। মাটির তৈরি ঘরের পলিথিন বিছানো ছাউনির ওপরে ইটচাপা দিয়ে বৃষ্টি থেকে কোনভাবে রক্ষা পেতেন। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সমুদ্রের জোয়ারের পানিতে ভেঙে যায় তার এ ঘর। ঘর থেকে কিছু বাহির করতে পারে নাই। ৩ জন ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন একেবারে।

জানা যায়, রোজিনা বেগম ৬ বছর পূর্বে তার স্বামীকে (কাইছার) হারিয়েছেন। তার ছোট ছোট তিনটি বাচ্চা। বড় ছেলে নেজামের বয়স ১০, মেয়ে নিশাদের বয়স ৬ বছর এবং সিফার বয়স ৫ বছর।

রোজিনা বেগম বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর তিনি এখানে বাস করেন। তার স্বামী মারা যাবার ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে সে খুব কষ্টে আছেন। দিনে এনে দিনে খায়। তিনি বাড়িতে মানুষের কাপড় সেলাইয়ের কাজ করেন। যদি সেলাই করার জন্য কাপড় পাওয়া যায়, তাহলে আহার জুটে পরিবারের। না হয়, অনাহারে চলে সংসার।

তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে তার ঘর ভেঙে শেষ হয়ে যায় মাথা গোজানোর ঠাঁই। ছোট ছোট তিনটি বাচ্চা নিয়ে কার দু’য়ারে ছুঁটবেন তিনি জানেন না। বাচ্চার বই, ড্রেস এবং অনেকের সেলাই করার জন্য দেওয়া কাপড়গুলো ভেসে যাই বলেও জানান তিনি।

জোয়ারের পানি বাড়লে তার ঘুম হারাম হয়ে যায়। লোক লজ্জার ভয়ে কারো কাছে যেতে পারছেন না। এখন শরীরের কাপড় ছাড়া কিছু নেই। যদি সরকার একটা ঘর উপহার দেয়। তাহলে তিনি শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন। তিনি সরকারের কাছে একটি ঘরের আকুতি জানান।

রোজিনার মা রাজিয়া বেগম বলেন, আমার ও স্বামী নেই। আমার মেয়ের ঘরটা ভেঙে গেছে। আমাদের কোন আয় নেই। নাতি-নাতনী নিয়ে কোথায় যাব জানিনা। যদি সরকার একটা ঘর দেয়, তাদের আশ্রয় হবে। রোজিনার বাচ্চা গুলো নুরানি মাদ্রাসায় পড়েন বলে তিনি জানান।

এই বিষয়ে মহেশখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান মহেশখালী ট্রিবিউন কে বলেন, ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা হচ্ছে। তাদের নগদ অর্থ-চাল-শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে।

ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়া মানুষগুলোর জন্য কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে কিনা জিজ্ঞেস করা হলে জবাবে তিনি বলেন, সুশীলন নামে একটি এনজিও এর মাধ্যমে তাকে ঘরবাড়ি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাদের সহযোগিতা করার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত আছে।

Related News
- Advertisment -

Popular News

error: Content is protected !!