𝙇𝙪𝙙𝙤 full Movie Review
“” ইনসান ক্যায়া হ্যায়? লাইফ কী বিসাত পর হরি, নীলি, লাল, পীলী গোটিয়া...অউর ইন সবকা পাসা হ্যায় উপারওয়ালে কে হাথ। “”
———– এই একটি কথার উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে পুরো একটি সিনেমা।
চারটি ভিন্ন ভিন্ন গল্প,কিন্তু তাদের প্রত্যেক এর গন্তব্য একই পথে।
কেউ জানে না, কোথায় তাদের শেষ জার্নি,শুধু জানা আছে জীবন চলার পথে সম্মুখীন হতে হবে ভাল মন্দ বিভিন্ন বিষয় এর উপর।
কিন্তু এই ভাল মন্দ অতিক্রম করার সময় আরো চার ধরনের জীবনের সাথে নিজের জীবন কে মিশিয়ে দেয়ার নাম হলো
“” লুডু “”।
সিনেমায় যেহেতু আলাদা করে ৪ টি প্লট নিয়ে একটি গল্পতৈরি করা হয়েছে, সেহেতু পরিচালক অনুরাগ বসু কে ২.৩ ঘন্টার মত স্ক্রিন দিতে হয়েছিলো ক্যামেরায়।
Ludo
Cast: Abhishek Bachchan, Aditya Roy Kapur,Rajkummar Rao, etc.
Director : Anurag Basho
Imdb: 7.6
[[সামান্য স্পয়লার আছে]]
প্লট ১—
প্রথম গল্পে দেখানো হয় দুজন প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে চলমান কিছু ঘটনা দিয়ে। যেমনঃ আকাশ তার গার্লফ্রেন্ড সানায়াকে প্রচন্ড ভালবাসে। কিন্তু সানায়া একটু লোভি টাইপ প্রেমিকা হওয়ায়, সে আরো ধনি কাউকে বিয়ে করতে চায়। কিন্ত ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে, সানায়ার বিয়ের কিছু দিন আগে আকাশ এর সাথে সেক্স ট্যাপ ইনটারনেট এ ভাইরাল হয়ে যায়।
শুরু হয় আকাশ ও সানায়ার ট্রাজেডিক লাইফ। তারপর সানায়ার বিয়ে হয় কি না? আকাশ এই কি সানায়াকে পেয়েছে, এই টুকো দেখতে লুডু চালিয়ে দেন আপনার স্ক্রিন এ।
ক্যারেক্টর পরিচিতি–
আকাশ- আদিত্য রয় কাপুর
অহনা- সানায়া মালহোত্রা
প্লট ২—
অপরাধ দুনিয়ার গডফাদার সত্তুর ডান হাত হিসেবে পরিচিত মুখ বিট্টু তিওয়ারি এর হাসি কান্নার জীবন নিয়ে এই প্লট তৈরি।
কিন্তু, বিট্টু একসময় একটি মেয়েকে ভালবেসে বিয়ে করে-
বিয়ের পর তার সস্ত্রীর কথা মোতাবেক সে অপরাধ জগত থেকে বের হয়ে চলে আসে। কিন্তু, কথায় আছে না, “পাপ ছাড়ে না বাপকে”।
সেই অনুযায়ী বিট্টু ও ছাড় পায়নি ক্রাইম এর হাত থেকে।
আবার পুলিশ তার সাবেক অপরাধ এর জন্য জেলে নিয়ে যায়,৬ বছরের জন্য। এখন কথা হলো- এই ৬ বছরের ভিতরে কি বিট্টুর স্ত্রী ও তার সন্তান বিটূটুর জন্য অপেক্ষা করবে?
সেটি দেখতে হলে পুরো সিনেমাটি দেখে ফেলুন।
ক্যারেক্টর পরিচিতি—
লস্কয় আনন্দ বিট্টু– অভিষেক বচ্চন
আশা নেগি- বিট্টুর স্ত্রী
প্লট ৩—
ছোটবেলার প্রেমিকা পিংকি কে প্রচুর ভালবাসে সহজ সরল অলক। কিন্তু অলক পিংকির বিয়ে হয়ে যাওয়ায় পিংকির আশা ছেড়ে দিয়েছিলো। কিন্তু, হটাৎ একদিন চোখে পড়ে পিংকি তার স্বামীর ঘড়ে সুখে নেই। তাই অলক আবার শুরু করে পিংকির সাথে বিভিন্ন ভাবে ছোটাছুটি, যদি আবার পিংকি কে পেয়ে যাই, এমন আশায় পথ চেয়ে রইলো অলক।
তবে কি অলক পিংকি কে আবার ফিরে পাবে?
বাকিটুকু সিনেমা বলবে।
লুডু মুভির ক্যারেক্টর পরিচিত ঃ
অলক- রাজকুমার রাউ
পিংকি–ফাতিমা সানা শেখ
প্লট ৪– শেষ প্লট টি শুরু হয় রাহুল ও শ্রিজার এর মধ্যকার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে। যারা নিজেরা নিজেদের চাকুরি নিয়ে সমস্যায় রয়েছে। এক সময় তাদের ভাগ্যা বদলে যায়। ভাগ্য বদলের পিছনে রয়েছে করুন এক কাহিনী। যার কথা এখন না বললেই নয়।
সে হলো সত্তু ত্রিপাটি। সত্তু হলো এই সিনেমার গল্পের প্রধান খলনায়ক। যাকে কেন্দ্র করে লুডুর গুটির মত উলট পালট হতে থাকে সিনেমায় থাকা বাকি গল্প গুলোর চরিত্রের।
ত সত্তু ত্রিপাটি কি এমন করলেন, যে তিনি একাই এত গুলো জীবনের সাথে জড়িয়ে গেছেন?
ক্যারেক্টর পরিচিতি–
রাহুল–রোহিত শ্রেরাফ
শ্রিজার–পিয়ারলি মানায়
এই টুকো বুঝতে হলে যে,আপনাকে দেখতে হবে সম্পূর্ণ সিনেমাটি।
আমার চোখে যেমন লাগলো সিনেমাটিঃ–
১/ পরিচালনা:
সবার আগে বলতে চাই এই সিনেমার পরিচালক এর নির্মাণ শৈলী নিয়ে।
সিনেমাটি নির্মান করেছেন পছন্দের ইন্ডিয়ান পরিচালক দের মধ্যে থাকা একজন, যিনি অনুরাগ বসু নামে পরিচিত।
অনুরাগ এমন একজন পরিচালক যার বেশির ভাগ সিনেমার চরিত্র যেনো আলাদা আলাদা নিত্যনতুন বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে।
বরফি থেকে শুরু করে মেট্রো, যার প্রত্যেক টি কাজ অনেক প্রশংসনীয় দর্শক মহলে।
লুডু ও বাদ যায় নি প্রশংসা থেকে।
৪ টি ভিন্ন ভিন্ন প্লটকে এত সুন্দর করে একটি গল্পে রূপ দিয়েছেন তিনি, তারপর আবার পর্দায় ক্যামেরার মাধ্যেমে দারুন ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লুডু রূপে।
লুডু তে শুধু ক্রাইম এই পাবেন না, পাবেন হাসি, কান্না, আবেগ-ভালবাসার চূড়ান্ত নিদর্শন। সাথে রয়েছে ব্ল্যাক কমেডি ইন্ডিয়ান ফ্লেভারে।
অভিনয়ঃ-
অনুরাগ বসু সিনেমাকে আরো হাই ভোল্টেজ করতে তিনি কাস্ট করেছেন অসাধারণ সব অভিনেতাদের।
প্রত্যেক এই তাদের নিজেদের চরিত্রের জন্য বেশ ডেডিকেটেড ছিলেন যা সিনেমাটি দেখলেই বোঝা যায়।
অভিষেক যেনো নিজের পছন্দের জায়গা পেয়ে, একটু কমতি রাখলেন না,সেরাটুকো দিতে। অনেকদিন পর অভিষেক কে অভিনয়ে সাবলীল লেগেছে।
অন্যদিকে ইন্ডিয়ান ভার্সেটাইল অভিনেতা রাজকুমার রাউ কেত কিছু বলার নেই। জাস্ট অসাধারণ অভিনয় দেখিয়েছেন। অলক চরিত্র টাকে যেনো তিনি গিলেই খেয়ে ফেলেছেন, এমন মনে হয়। এত ফ্লেক্সিবল এফোর্ট, সত্ত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।
পংকজ ত্রিপাটি হলেন এনাদার ভার্সেটাইল ইন্ডিয়ান অভিনেতা। যিনি লুডুতে নিজের প্রমান দিয়ে গেছেন। এর ছেয়ে আর বেশি কিছু বলার নেই।
এছাড়া ফাতিমা সানা থেকে শুরু করে আদিত্য রয় কাপুর রাও বাকিদের সাথে তাল মিলিয়ে গেছেন সাচ্ছন্দ্য তার সাথেই।
চিত্রনাট্য:- যেহেতু অনুরাগ বসু নিজেই চিত্রনাট্য লিখেছেন।সেহেতু চিত্রনাট্য লিখতে কোন দিক দিয়ে ঘাটতি রাখেন নি, তা পর্দায় রূপ দিতে। যখন কমেডি দরকার হয়েছে, তখন সেটি দিয়েছেন পরিমান মত, আবার যখন হালকা রোমান্স এর সাথে ট্রাজেডি দিয়েছেন, তখন ত চিত্রনাট্য তার পরিপূর্ণ রূপ ধারন করেছিলো।
যেখানে সংলাপ থেকে শুরু করে সিনেমাটোগ্রাফি, সব দিক টি একাই সামলিয়েছেন অনুরাগ বসু।
সংলাপ এই সিনেমাকে আরো ভাবার্থক করে তুলে।যা আমার কাছে ভালই লেগেছে।