একদিকে বৈশ্বিক মহামারী করোনার থাবা, অপরদিকে সরকার ঘোষিত লকডাউন। এ-ই দূর্যোগে অভাব-অনটনে,খাবার সংকটে সমাজের অসহায় হতদরিদ্র ছিন্নমূলের স্বল্প আয়ের মানুষ, লকডাউনে দিশেহারা । কিন্তু তাদের পাশে নেই স্হানীয় জনপ্রতিনিধি সহ সমাজের বিত্তবানরা।
সকাল থেকে বসে আছি, কোন যাত্রী পাই নাই। মাঝে মাঝে পুলিশ এসে ধরে ফেলে, রিকশা চলাতে দেই না। ধরে ধরে মারে! এবারের লকডাউনে কোন সহযোগিতা পাচ্ছি না। এভাবে অশ্রু জলে কথা গুলো বলছেন রিকশাচালক রিদুয়ান৷
প্রতিদিনের মতো কাজের সন্ধানে আসা দিনমজুর মোহাম্মদ আলী বলেন, দিনে এনে দিনে খাই। এখন লকডাউন হওয়ায় কাজ বন্ধ। ঘরে খাবার নেই। কাজের অপেক্ষায় সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও এখন ও কাজ আসেনি। সংসারের খরচ চালানো খুব কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আয় বন্ধ থাকলে সংসার চলবে কি করে।
২২ এপ্রিল থেকে সরকারের ঘোষিত লকডাউন বৃদ্ধি পাওয়ায় খুব দিশেহারা হয়ে পড়ছেন দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষ। করোনা-লকডাউন বাড়লে তাদের শঙ্কা বাড়তে থাকে। এই দুঃসময়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে আরো কষ্টে পড়ে যাচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। অনেকে খাবারের সংকটে পড়লে কোন সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে জানান।
হোটেলে চাকরি করা রফিক বলেন, হোটেল বন্ধ কোন বেতন পাচ্ছি না। ওষুধ আর পরিবারের খাবার কেনার টাকা না থাকায় চরম দুশ্চিন্তায় আছি।
কলিম উল্লাহ কলিম নামের এক হোটেল চাকুরীজীবি বলেন, খুব কষ্টে আছি। আমাদের মার্চ মাসে বেতন দেওয়া হয় নাই, এপ্রিলে বেতন পাব কিনা জানি না। তিনি আরো বলেন, আমরা সরকারি কোন সাহায্য-সহযোগিতা পাই না। তাছাড়া আমাদের বেতন খুব কম, অতিথিদের বকশিসের টাকায় আমাদের আয়। এখন অনেকে বাসাভাড়া দিতে না পেরে খুব কষ্টে আছেন। আমাদের সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা দেওয়া হউক। আমাদের বেতন বোনাস সহ কোন কর্মী যেন ছাঁটাই না হয় এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হউক।
এই বিষয়ে মাতারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জি.এম ছমি উদ্দীন বলেন, এখনো পর্যন্ত কারো সাহায্য সহযোগিতা করার খোঁজ পাই নাই। তবে এই মুহূর্তে সবার উচিত গত বছরের মত স্বল্প আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
তিনি বলেন, সামনে গতবারের মত এবারো মানুষের পাশে দাঁড়াব। কয়েকদিনের মধ্যে মানুষকে দ্রুত কিছু ইফতার সামগ্রী পৌঁছে দিব।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ এই প্রতিবেদককে বলেন, আমরা স্থানীয় উদ্যোগে মানুষকে ইফতার সামগ্রী দিয়েছি। তবে সরকারি ত্রাণ আসলে তা দ্রুত নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।