Thursday, April 18, 2024
HomeNewsহেফাজতের তান্ডব - গ্রেফতার আতংকে এলাকা ছাড়া অনেকেই

হেফাজতের তান্ডব – গ্রেফতার আতংকে এলাকা ছাড়া অনেকেই

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আল্লামা মামুনুল হক নিয়ে গত ০২ এপ্রিল ঢাকার সোনারগাঁও একটি আবাসিক হোটেলে ঘটে যাওয়া ইস্যুতে মহেশখালীতে গভীর রাতে হঠাৎ দফায় দফায় লাঠি মিছিল থেকে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার আতংকে এলাকা ছাড়া হয়েছে বড় মহেশখালীর অনেকেই।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, হেফাজত নেতা মামুনুল হক গত ২ এপ্রিল ঢাকার সোনারগাঁও একটি আবাসিক হোটেলে ‘কথিত স্ত্রী সহ অবরুদ্ধ‘ এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে হেফাজতপন্হীরা হঠাৎ লাঠি মিছিল শুরু করে উপজেলার কালারমার ছড়ায় বৌদ্ধ মন্দিরে আক্রমণের চেষ্টা, বড় মহেশখালীতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিসে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং উপজেলা প্রশাসন ও থানা এলাকায় হামলা করা হয়। উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটক বন্ধ থাকায় হামলাকারীরা বাইর থেকে ইটপাটকেল ছুঁড়ে উপজেলা শিক্ষা ভবন ও নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের কাঁচ ভাঙচুর করে।

হেফাজতের তান্ডব ঘটনায় মহেশখালী থানা পুলিশ ও পাবলিক বাদি হয়ে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করে। তিনটি মামলায় নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা সহ প্রায় ৯০০ জনকে আসামি করা হয় ৷

ইতিমধ্যে উক্ত মামলায় উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তারেক রহমান জুয়েল ও অপর দুই মামলার প্রধান আসামি মাওলানা মোকাররম সহ ঘটনার সাথে জড়িত অনেককেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের চিরুনী অভিযান অব্যাহত রয়েছে ৷

অপরদিকে নিরীহ ও ঘটনার সাথে জড়িত না এমন অনেকের নাম এজহারে উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা থাকায় গ্রেফতার আতংকে এলাকা ছাড়া বড় মহেশখালীর অনেকেই। উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত না অনেকের নামে মামলা ও জড়িতদের টাকার বিনিময়ে মামলা হতে বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ সহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।

তবে হেফাজতের ব্যানারে জামায়াত-বিএনপির লোকজন এ হামলা চালিয়েছে বলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দাবি করে আসছেন।

এদিকে একাধিক সূত্রের অভিযোগ, মিছিল, হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার পরেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত পরিবারের লোক হওয়ায় এজাহারে নাম উল্লেখ করা হয়নি অনেকের। তাদের অভিযোগ নিরীহ অনেককেই আসামি করে মামলা বাণিজ্যে ব্যস্ত আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহোযোগি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

ভুক্তভোগীরা উপজেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, সেইদিন রাতে মহেশখালীতে কারা মিছিল বের করেছিলো, কারা কারা উপজেলা পরিষদ, থানা, আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর করেছিলো, হেফাজতের তান্ডব বলে চালিয়ে দিছিলো তা নিরপেক্ষ তদন্ত পূর্বক দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হোক।

প্রয়োজনে ভিডিও চিত্র ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করা হোক। তারা কোনো নিরীহ মানুষ যাতে গ্রেফতার কিংবা হয়রানির শিকার না হয় তা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এদিকে গত ০৪ এপ্রিল (রবিবার) জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌর মেয়র আলহাজ্ব মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে জেলা আওয়ামী, জেলা যুবলীগ, ছাত্রলীগ সহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বিষয়টি প্রশাসনকে গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে ভিডিও চিত্র ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

হেফাজতের তান্ডবের ঘটনায় অপরদিকে গত, ০৭ এপ্রিল (বুধবার) পরিদর্শনে আসেন- কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন সহ স্হানীয় শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা।

জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশিদের নেতৃত্বে ঘটনাস্হলে পরিদর্শনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এড. সিরাজুল মোস্তফা, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. ফরিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সহ স্হানীয় জনপ্রতিনিধি, গোয়েন্দা সংস্থা সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকতগণ উপস্থিত ছিলেন।

পরে জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশিদ উপজেলা সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক এক বিশেষ সভায় বলেন,
হামলাকারীরা কেউ ছাড় পাবে না, তাদের ভিডিও চিত্র সহ সিসিটিভি ফুটেজ আছে- এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সহ গোয়েন্দা বিভাগ বিষয় টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে। হামলাকারী যে-ই হোক, আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Related News
- Advertisment -

Popular News

error: Content is protected !!