Thursday, April 25, 2024
HomeNewsভোট দিতে না, ভোটার হতে এসেছি

ভোট দিতে না, ভোটার হতে এসেছি

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ ভোরের আলো ফুটবার পরপরই দীর্ঘ লাইন, নির্বাচন অফিসের প্রবেশ পথ থেকে শুরু করে উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটক পর্যন্ত সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে আছে সহস্রাধিক নারী-পুরুষ। প্রথমে দেখলে মনে হবে- কোনো ভোট কেন্দ্র কিংবা জনসভাস্হল।

কেউ শিক্ষক, কেউ শিক্ষার্থী। কেউ বা চাকরিজীবী। আবার কেউ প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা।

কে শোনে কার কথা, ঘন্টার পর ঘন্টা আছে দাঁড়িয়ে।

এতক্ষণ বলেছিলাম- মহেশখালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত নতুন ভোটার হতে আগ্রহী তরুণ-তরুণীদের কথা।

অভিযোগের শেষ নেই মহেশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ জুলকার নাঈমের বিরুদ্ধে। স্বজনপ্রীতি, টাকার বিনিময়ে তড়িৎ গতিতে নতুন ভোটার করিয়ে দেওয়া, নিয়মিত অফিস না করা, সেবা প্রার্থীদের সাথে দূর ব্যবহার সহ পাহাড়সম অভিযোগ।

অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ থেকে শুরু করে বসতবাড়ির খতিয়ান পর্যন্ত সব কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকলেও নতুন ভোটারের ফাইল জমা নিচ্ছে না তিনি।

আজ,কাল, পরশু বলে মাসের পর মাস ঘুরাচ্ছে সেবা প্রার্থীদের। পক্ষান্তরে কিছু বহিরাগত দালাল ও নির্বাচন অফিসের কর্মচারীদের মাধ্যমে নতুন ভোটারের নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। টাকা দিলেই ৩-৪ দিনের মধ্যে মিলছে এনআইডি কার্ড।

উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়ন থেকে আসা নাজনীন সুলতানা, পড়েন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি আক্ষেপ করে জানান, “এবার সহ চারবার এসেছি, প্রথম দু’বার কাগজপত্র সম্পূর্ণ নেই বলে তাড়িয়ে দেয়, সর্বশেষ গত ১ তারিখ এসেছি, ওইদিন সময় নেই বলে পরে আসতে বলেন। তা-ই আজ এসেছি- আজকেও জমা দিতে পারি কি-না জানি না।

বড় মহেশখালী থেকে আসা মোবারক হোসেন বলেন, তিনি গ্যাস সরবরাহ কাজে নিয়োজিত গাড়ির ড্রাইভার। রয়েছে বিআরটিএ এর ড্রাইভিং লাইসেন্স ও পাসপোর্ট। চাকরি করেন মংলা বন্দরে। নেই শুধু জাতীয় পরিচয় পত্র। চাকরি থেকে ছুটি ৪ বারা এসেছেন ফাইল জমা দিতে। কাগজপত্র সব সঠিক থাকার পরেও তার দাদার আইডি কার্ড নিয়ে দেখা করতে বলেন নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ জুলকার নাঈম। কথামতো দাদার আইডি কার্ড নিয়ে দেখা করলেও ফাইল জমা না নিয়ে চলতি মাসের ১ তারিখ দেখা করতে বলেন। যথারীতি উপস্থিত হয়েও জমা দিতে পারেননি ভোটার ফাইল। দীর্ঘ ১ মাস দৌড়াদৌড়ি করেও জমা দিতে পরেনি তাঁর ফাইল টি।

এভাবেই শত তরুণ-তরুণীর অভিযোগ নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। সহস্রাধিক নারী-পুরুষ নিজেকে কাগজে কলমে বাংলাদেশি নাগরিক প্রমাণের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন।

অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাদ দিয়ে ঢাক-চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন নতুন ভোটার হতে। কিন্তু,-কে শোনে কার কথা? ফাইল জমা নিবে, নিচ্ছে না, নিবে- এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নির্বাচন কর্মকর্তার কাজ।

এ বিষয়ে জানতে মহেশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ জুলকার নাঈমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

তবে, নির্বাচন অফিসে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন- নির্বাচন অফিসের সমস্ত কাজ তথা ফাইল জমা নেওয়া থেকে শুরু করে অনুমোদন ও ছবি তোলা পর্যন্ত সমস্ত কাজে নির্বাচন অফিসার স্যারের সরাসরি সম্পৃক্ততা। এখানে স্যার যেমনি করবে, ও-ই রকমই হবে। তবে স্যারে সাথে পরিচিত অনেকেই ৪-৫ দিনের মধ্যে আইডি কার্ড পেয়ে যাচ্ছে।

সচেতন মহলের দাবি সাপ্তাহে নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট ইউনিয়নের ভোটার হতে আগ্রহী প্রার্থীদের ফাইল জমা নেওয়ার ব্যবস্হা থাকলে, সাধারণ জণগণ কে এভাবে ভোগান্তির শিকার হতে হতো না।

Related News
- Advertisment -

Popular News

error: Content is protected !!