Thursday, April 25, 2024
HomeNewsবয়কট কক্সবাজার!

বয়কট কক্সবাজার!

বয়কট কক্সবাজার!

গত কয়েকদিন আগে কক্সবাজারে যে ধর্ষণটা হয়েছে সেটা নিয়ে খুব কথা কাটাকাটি হচ্ছে। সকলের মুখে একটাই আওয়াজ

বয়কট_কক্সবাজার।

মূল টপিকে যাওয়ার আগে ওই ধর্ষণের কিছু তথ্য তুলে ধরতে চায়।

চলুন, “আমাদের সময়”চ্যানেলের একটা নিউজ দেখে আসি….

✔ওই নারী গত বুধবার সকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে আসেন। তারা ওঠেন শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে। সেখান থেকে বিকেলে যান সৈকতের লাবণী পয়েন্টে। সেখানে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কাধাক্কি হয়।

সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে কয়েক যুবক তার আট মাসের সন্তান ও স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। আর তিন যুবক আরেকটি অটোরিকশায় ওই নারীকে তুলে নিয়ে গলফ মাঠের পেছনের নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর ওই নারীকে নেওয়াহয় জোনের ‘জিয়া গেস্ট ইন’ নামের একটি হোটেলে। সেখানে তাকে ঘটনা কাউকে না জানানোর হুমকি দেওয়া হয়। এর পর হোটেলকক্ষের দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে দুর্বৃত্তরা চলে যায়।

এই ঘটনা নিয়ে কক্সবাজার পুলিশ সুপার বলেনঃ-

মামলার মূল আসামি আশিক তাদের পূর্বপরিচিত। তা ছাড়া গত বুধবার সকালে নয়, স্বামী-সন্তানসহ ওই নারী কক্সবাজার এসেছেন প্রায় তিন মাস আগে। তারা কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলে ছিলেন। এই নারী এর পূর্বেও গত ৩ মাসে আরো ৩ টা মামলা দায়ের করে

এবং সবকিছু সে স্বীকার করেছে।তাই এই বিষয়টা একটু সন্দেহজনক। কারণ তিনি আমাদের বলেছেন একরকম তদন্তের পর পাচ্ছি অন্যরকম। কী কারণে এসব হোটেলে ছিলেন, কক্সবাজারে তাদের আগমনের কারণ কি, ব্যয়বহুল একটি শহরে কীভাবে কাটিয়েছেন, তাদের সঙ্গে কার কার যোগাযোগ ছিল- এসব বিষয় জানা যাবে তদন্তের পরে।

✪✪ওই মহিলার বক্তব্য আর পুলিশের বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিন্ন।

খেলা এখানেই শেষ নয় আরো আছে।

ওই নারী যেই দোকানের কথা বলেছেন তার কাছ থেকে জবানবন্দি নেওয়া হয়ঃ-

✔ স্থানীয় চায়ের দোকানের মালিক ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘আশিক এক নারীকে নিয়ে ২২ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে আমার এখানে আসেন। এর পর ওই নারীকে দিয়ে তার স্বামীকে ফোন করান। সে সময় ওই নারী তার স্বামীকে মুঠোফোনে বলেন,** ‘তুমি নাকি আশিক ভাইয়ের সাথে বেয়াদবি করেছ। তুমি এখানে আসো। **আমি আছি, আশিক ভাই তোমাকে কিছু করবে না।’ পরে ওই নারীর স্বামী একটি বাচ্চাকে নিয়ে আমার দোকানে আসে। এর পর আশিক কিছুক্ষণ এখানে অবস্থান করেন।** তার পর ওই নারীকে মোটরসাইকেলে নিয়ে চলে যান।’

✪✪আরে ভাই, এক মিনিট এক মিনিট, <প্রথমে তারা অপরিচিত ছিল, ধাক্কা খেলো, তার বাচ্চা আর স্বামীকে কিডন্যাপ করলো, ওই দোকানের পেছনে ধর্ষণ করল, তার পর সিএনজি করে নিয়ে গেলো।

✔কিন্তু পুলিশ ও দোকানের বক্তব্যের মালিকের সাথে মিলাতে গেলে….

১। ওই মহিলা বলে সে এসেছে বুধবার সকালে, পুলিশ বলছে সে এখানে আছে ৩ মাস যাবত।

ওই মহিলা বলেছেন সে ধর্ষকদের চিনেন না। কিন্তু পুলিশ বলছে এরা পূর্বপরিচিত। এবং ওই দোকানদারের বক্তব্যে ধর্ষককে ভাই সম্বোধন করে বলল, আশিক ভাই। অর্থাৎ ওই মহিলা ধর্ষকদের পূর্ব পরিচিত।

২। ওই মহিলা বলেছিলেন তার স্বামী এবং বাচ্চাকে তারা তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু দোকানদারের বক্তব্যে স্পষ্ট বুঝা যায় তার স্বামী বাচ্চাকে ওই নারী নিজেই ডেকেছিলেন। বলেছেন তুমি নাকি আশিক ভাইয়ের সাথে বেয়াদবি করেছো। এবং পরে তার স্ত্রী তাকে জোর করে ওখানে আনেন। বলেছেনঃ- আমি আছি, আশিক ভাই তোমাকে কিছু করবে না। তাহলে তার স্বামী এবং বাচ্চাকে তুলে নিয়ে গেছে বলা বক্তব্যটা মিথ্যে।

৩। ওই নারী বলেছেন, তাকে দোকানের পেছনে ধর্ষণ করে কিন্তু এখানে ধর্ষণ করার কথাই উল্লেখ নেই। যদি থাকতো তাহলে দোকানের মালিক বলতো। আর যদিও করেও থালে তাহলে তখন তার স্বামী উপস্থিত ছিল ওখানে। তার মানে কি তার স্বামী উপস্থিত থাকা অবস্থায় ধর্ষণ করেছে নয়তো ঝোপের পেছনে ধর্ষণ করা হয় নি। দুটোর একটি হবে।

৪। ওই নারী বলেন কয়েকজন তাকে নিয়ে সিএনজি করে জিয়া গেস্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পুলিশ তদন্তে পায়, আশিক তাকে বাইকে করে নিয়ে গেছে।

এবং এটা নিয়ে ওই নারী আবার সাক্ষাৎকার দিয়েছেন এবং স্বীকার ও করেছেন। ওই নারী বলেন, আমার স্বামী ও সন্তানকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে আমাকে মোটরসাইকেলে করে জিয়া গেস্ট ইনে নিয়ে আসে। মোটরসাইকেল আশিক চালাচ্ছিল; আর কেউ ছিল না।’

বাহ্! কি সুন্দর বক্তব্য দেখেছেন। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে সব কিছু ডাবল ডাবল। একটাও সত্য বক্তব্য নেই।

✔ এবার আপনারা বলেন এই দায় কি কক্সবাজার নিবে? এটা কি কক্সবাজারের দোষ। আপনারা নিজেদের স্বার্থের জন্য ধর্ষিতা হবেন, ধর্ষণ করবেন, দায়টা চাপিয়ে দিবেন কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে পর্যটক ধর্ষণ হয়েছে।

 অসাধারণ না আসলে।

✔গত দুই বছরে বাংলাদেশে ধর্ষণের সমীকরণটা একটু বলি,

✪✪গত ২২ নভেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর ২০২০-২১ অর্থবছরের কার্যাবলি সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ধর্ষণ মামলা ৫ হাজার ৮৪২টি, ২০২০-২১ অর্থবছর বেড়ে ৭ হাজার ২২২টি। নারী নির্যাতন ১২ হাজার ৬৬০টি থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরে বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার ৫৬৭টি।

✔আপনাদের উচিত এই বাংলাদেশ থেকে চলে যাওয়া উচিত।এখানে আপনার পরিবার অনিরাপদ। এত এত ধর্ষণ? আপনার তো এই বয়কট করা উচিত!

করবেন এই বাংলাদেশকে বয়কট? এটা কি বাংলাদেশের দোষ? এর দায়ভার কেনো বাংলাদেশ নিবে? যেই স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে হচ্ছে এসব এটা কি ওই প্রতিষ্ঠানের দোষ?

এক কথায় উত্তর হবে- না।

তাহলে কক্সবাজারে হয়ে যাওয়া এই অঘটন এই ধর্ষণ এর দায়ভার কেনো কক্সবাজার নিবে? যদিও আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি এটা কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা নয় এটা এদের নিজেদের ব্যাক্তিগত স্বার্থ। আর এরা পর্যটক হলেও ৩ মাস ধরে এখানে আছে। এরা একে অপরকে চেনে। সে নিজে স্বেচ্ছায় গেলো আশিকের সাথে।

 এমনও হতেও পারে এটা রাজনৈতিক কোন স্বার্থ। অনেক কিছু হতে পারে। এতে কক্সবাজারের দোষটা কোথায় আমি দেখি না।

✔আপনি দেখাতে পারবেন?

তাহলে এতদিন ধরে আপনারা বয়কট কক্সবাজার বয়কট কক্সবাজার করে চিল্লাইলেন? কি আবেগের ঠেলা বেশি নাকি আপনাদের।

আপনারা এই কক্সবাজারকে বয়কট করলে এতে কক্সবাজারের কিচ্ছু যায় আসে না কিচ্ছু না। বাংলাদেশের কয়টা জেলা বলতে পারবে আমাদের জেলা ছাড়া বাংলাদেশ অচল। কিন্তু আমরা কক্সবাজার বাসী বলতে পারবো আমাদের কক্সবাজার ছাড়া বাংলাদেশ অচল না হলেও কিছুটা দূর্বল। [কারণটা গুগলে কক্সবাজারের উন্নয়ন সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন]।

আমি ধর্ষকের পক্ষ নিয়ে কথা বলছি না। এরা অপরাধী অবশ্যই এদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। আপনারা অপরাধীদের শাস্তি চান।

কিন্তু কক্সবাজার নিয়ে কথা বলায় এত গুলো যুক্তি দেখালাম। এতেই কক্সবাজার কোন অংশে দায়ী নয়। কক্সবাজার আসেন না আসেন এটা আপনাদের ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু আমার মাতৃভূমিকে দোষারোপ করলে, আমার জন্মস্থানকে দায়ী করলে, আমার ভূমিকে নিয়ে অপবাদ চালালে আমি কথা বলবই।

#কক্সবাজার_আমার_মাতৃভূমি

আব্দুল্লাহ আল ফাতমি নাহী।

মহেশখালী, কক্সবাজার।

শিক্ষার্থী- বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ, কাপ্তাই।

Related News
- Advertisment -

Popular News

error: Content is protected !!