Thursday, April 25, 2024
HomeNewsদ্বিতীয় সিঙ্গাপুরে এখনো বাঁশের সাঁকো; নিরব ভূমিকায় জনপ্রতিনিধিরা

দ্বিতীয় সিঙ্গাপুরে এখনো বাঁশের সাঁকো; নিরব ভূমিকায় জনপ্রতিনিধিরা

ইশরাত মুহাম্মদ শাহ জাহানঃ

মহেশখালী উপজেলার বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র বড় মহেশখালীর বৃহত্তর মুন্সির ডেইল-পাহাড়তলী সড়কের পূর্ব পাহাড়তলী আব্দুল খালেক মেম্বারের (সাবেক) বাড়ি সংলগ্ন ব্রিজের আশেপাশের সড়কের বেহাল দশা। টানা ভারি বর্ষণে পাহাড়ি ঢলে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ছে সড়কটি।

অন্য দিকে পশ্চিম পাহাড়তলী তারতিলুর কোরআন মাদ্রাসা সংলগ্ন ব্রিজটির দীর্ঘ ৫০ বছরেও নির্মাণের আলোর মূখ দেখছেন না এলাকাবাসী।স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে বৃহত্তর মুন্সির ডেইল-পাহাড়তলী এলাকায় জনবসতি শুরু,

সেই থেকে ধীরে ধীরে ঘনবসতি হয়ে উঠছে এলাকাটি। হচ্ছে মসজিদ-মাদ্রাসা, পাকা-সেমি পাকা বাড়ি ঘর, দিন দিন বাড়ছে জনবসতি। কিন্তু হচ্ছে না শুধুমাত্র একটি ব্রিজ!

বৃহত্তর মুন্সির ডেইল-পাহাড়তলী সড়কটি যেভাবে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ক্ষত বিক্ষত হয়ে পড়ছে, তেমনি হচ্ছে না তাদের স্বপ্নের ব্রিজটি।

বড় মহেশখালী ইউনিয়নের সিংহভাগ জনগোষ্ঠীর পেশা কৃষিকাজ ও পান চাষ। তন্মধ্যে ধরতে গেলে ৫০ ভাগ মানুষই বৃহত্তর মুন্সির ডেইল-পাহাড়তলীর। এ-ই পান চাষী ও কৃষকগণ বৃহত্তর পাহাড়তলীর বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে পানের বরজ ও কৃষি ক্ষেত খামার করে থাকে। কিন্তু তাদের জন্য নেই যাতায়াতের কোনো সু-ব্যবস্হা।

এতেকরে স্হানীয় জনগোষ্ঠী, প্রান্তিক কৃষক-পান চাষি, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী সহ পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ স্হানীয়দের।

প্রান্তিক কৃষক ও পান চাষীদের কৃষি কাজে ব্যবহৃত কৃষি সামগ্রী কাঁধে বহন করে ক্ষেতে নিয়ে যেতে হচ্ছে, আবার সারাদিন পানের বরজ ও ক্ষেতে কাজ করে শেষে সন্ধ্যায় কৃষি পণ্য ও পানের ভার কাঁধে বহন করতে হচ্ছে এইসব প্রান্তিক কৃষকদের।

বড় মহেশখালীর এই বৃহত্তর মুন্সির ডেইল- পাহাড়তলী এলাকার বিশাল এক জনগোষ্ঠী কৃষি ও পান চাষি কৃষি পণ্য উৎপাদন ও পানের বরজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে, কিন্তু পশ্চিম পাহাড়তলীর এই ব্রিজ নির্মাণ ও পূর্ব পাহাড়তলীর সড়ক সংস্কার না হওয়ায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য ও পান বাজারজাত করতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রান্তিক কৃষক ও পান চাষিদের।

সরেজমিন ৩১ জুলাই (শনিবার) উপজেলার বড় মহেশখালীর বৃহত্তর মুন্সির ডেইল-পাহাড়তলী সড়ক ঘুরে দেখা যায়- দীর্ঘ কয়েক বছর পূর্বে নির্মিত হওয়া এই সড়কটি সংস্কারের অভাবে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেই সাথে চলতি বছর ভারী বর্ষণের ফলে সড়কের বিভিন্ন স্হান পাহাড়ি ঢলের কারণে ভেঙে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়ছে।এছাড়া বর্ষার মৌসুমে উক্ত সড়কে পাহাড়ি ঢল নামায় সড়কটি দিন দিন চালাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এ সড়কের বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে প্রতিনিয়ত হাজারো কৃষক, পান চাষী, ও স্হানীয় জনগোষ্ঠীর চলাফেরা।

সড়কের বড় মহেশখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড অংশ পশ্চিম পাহাড়তলী (নূরানী মাদ্রাসা সংলগ্ন) পাহাড়ি ঢল চলাচলের যে ছোট্ট খালটি রয়েছে এলাকাবাসীদের উদ্যোগে উঠার উপর বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। একবছর যে সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়, তা পরের বছর চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তাই প্রতিবছরই বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করতে হচ্ছে এলাকাবাসীদের।

এই বাঁশের সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করে যাচ্ছেন। স্হানীয় বাসিন্দা মুজিবুল হক আক্ষেপ করে বলেন- তাঁরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়ে বাঁশের সাঁকোর উপর চলাচল করে যাচ্ছে, সড়কের এ অবস্থা ও ব্রিজ নির্মাণ না হলে যেকোনো মূহুর্তে অপ্রীতিকর বড় দূর্ঘটনার আশংকা রয়েছে, স্হানীয় ইউপি মেম্বার শফিউল আলম কয়েকবার পরিদর্শনে আসলেও ব্রিজ নির্মাণের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

স্হানীয় বাসিন্দা হাফেজ বাইতুল্লাহ মাসউদ খুব আক্ষেপের সুরে বলেন- বৃহত্তর মুন্সির ডেইল, মাঝের ডেইল, পাহাড়তলী, দেবাঙ্গা পাড়া সহ বড় মহেশখালীর অধিকাংশ কৃষক ও পান চাষি এই এলাকার বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে কৃষি ক্ষেত খামার ও পানের বরজ করে থাকে, তাঁরা প্রতিদিন এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। স্হানীয় জনপ্রতিনিধির দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি সড়কটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার ও ব্রীজ নির্মাণ করার দাবি জানান।

এ বিষয়ে জানতে স্হানীয় ইউপি মেম্বার
(বড় মহেশখালী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড) শফিউল আলমের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ না করাই তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

স্হানীয়রা মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সাংসদ আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক, মহেশখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ শরিফ বাদশা ও বড় মহেশখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এনায়েত উল্লাহ বাবুল সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সড়কটি দ্রুত সংস্কার ও ব্রিজ নির্মাণের আহবান জানান।

Related News
- Advertisment -

Popular News

error: Content is protected !!