Thursday, March 28, 2024
HomeNewsকরোনার উচ্চ ঝুঁকিতে মাতারবাড়ী; তবুও কোরবানির হাটে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

করোনার উচ্চ ঝুঁকিতে মাতারবাড়ী; তবুও কোরবানির হাটে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

এম. কাইছারুল ইসলামঃ

স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানির পশুর হাট শুরু করার কথা থাকলেও মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে কোরবানির পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানছে না ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ।

স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে কোরবানির পশুরহাটগুলোর কর্তৃপক্ষেরও নেই কোনো উদ্যোগ।

ফলে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে লকডাউন শিথিল করে পশুর হাটগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে শর্ত হিসেবে প্রশাসনিক কিছু বিধিবিধান মেনে চলার বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। যার প্রধান বিষয় হলো পশুর হাটগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে। কিন্তু এসব বিধি মানতে দেখা যায়নি কাউকে। বাস্তবে শর্ত বা বিধিবিধানের কথা সবাই ভুলে গেছেন। সব হাট-ই এখন চলছে গাদাগাদি অবস্থায় উপচে পড়া ভিড়ে মানুষ-পশু একাকার হয়ে।

স্বাস্থ্যবিধি মানছেনা কেউ। হাটে ঘুরাঘুরি করা গরু ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাসাধারণের অনেকের মুখেই মাস্ক নেই । হাটের প্রবেশমুখে বসানো হয়নি জীবাণুনাশক টানেল।

১৭ জুলাই (শনিবার) মগড়েইল বাজার এবং ১৮জুলাই (রবিবার) পুরান বাজার সরেজমিনে গেলে চোখে পড়ে এমন দৃশ্য।

১৭ জুলাই (শনিবার) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরান বাজারের চেয়ে নতুন বাজারের চিত্রটা সামান্য ভিন্ন। মাতারবাড়ী নতুন বাজারে দূরত্ব বজায় রেখে গরু বাজার বসলেও কিছু ক্রেতা-বিক্রেতাদের মুখে মাস্ক ছিলনা। হাটের প্রবেশমুখে বসানো হয়নি জীবাণুনাশক কোনো টানেল।

জানা যায়, মহেশখালীতে করোনার উচ্চ ঝুকিপূর্ণ ইউনিয়নের মধ্যে মাতারবাড়ী অন্যতম। মাতারবাড়ীতে চলমান রয়েছে বিশ্বের অন্যতম মেঘা প্রকল্প- কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প, গভীর সমুদ্র বন্দর, সিঙ্গাপুর প্রজেক্টসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ। এসব প্রকল্পে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে করোনা পজিটিভ। যারা মাতারবাড়ীতে প্রতিনিয়ত লাগামহীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

গত ১৪ জুলাই (বুধবার) প্রকল্পে কর্মরত বাংলা বাজারের ১ জন করোনা পজিটিভ, ১৭ জুলাই (শনিবার) পুরান বাজারস্থ আরিফ হাউজেও ৬জন করোনা সনাক্ত হয়। যার কারণে পুরান বাজার হয়ে উঠেছে করোনার হট স্পট। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মানছেনা কেউ, প্রশাসনেরও নেই কোন নজরদারি।

গরু বিক্রি করতে আসা জামাল হোছেনকে মাস্ক পরে নি কেন জানতে চাইলে, তিনি উত্তরে বলেন- মাস্ক পকেটে আছে, পুলিশ আসলে পরে নিবো।

গরু ক্রয় করতে আশা সাইফুল ইসলাম মাস্ক না পরার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন- আমাদের দেশে করোনা নেই। আমরা দুর্নীতি করিনা, যারা দুর্নীতি করে তাদের করোনা হবে, আমাদের না।

মাতারবাড়ী নতুন বাজারের ইজারাদার রাকিবুল ইসলাম লিটন বলেন, আমাদেরকে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজুর রহমান এবং মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল হাই হাট-বাজার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। আমরা সেই মতে হাট-বাজার পরিচালনা করতেছি। তিনি আরো বলেন, মাস্ক ছাড়া কোন ক্রেতা -বিক্রেতাকে হাটে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমরা নিজেরাই মাস্ক বিতরণ করেছি এবং মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করেছি।

স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার জন্য গরু প্রবেশ এবং বাহির হওয়ার আলাদা আলাদা গেইট করা হয়েছে।

মাতারবাড়ী মগড়েইল বাজারের ইজারাদার, ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগে সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোছাইন জানান, আমি উপজেলা থেকে বাজার ইজারা নিয়ে আবার অন্য একজনকে ইজারা দিয়ে দিছি। বাজার চালাকালীন সময়ে আমি বাসায় ছিলাম। বাজারে কতটুকু স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে তা আমি অবগত নই।

এ বিষয়ে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজুর রহমান জানান, আমরা প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং বাজারের ইজারাদারদের স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি বাজারের ইজারাদারদের মাঝে মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমরা প্রতিটি বাজারে পর্যায়ক্রমে অভিযান পরিচালনা করতেছি।

Related News
- Advertisment -

Popular News

error: Content is protected !!