Friday, March 29, 2024
HomeSportsইংল্যান্ডের স্বপ্নভঙ্গ; ৫৩ বছর পর ইউরো সেরা ইতালি

ইংল্যান্ডের স্বপ্নভঙ্গ; ৫৩ বছর পর ইউরো সেরা ইতালি

সবে মাত্র রেফারির বাঁশি। বল দু’বার রদবদল। ঘড়ির কাটা মাত্র ২ মিনিট না ছুঁতেই ইতালির জালে বল। উল্লাসে ফেটে পড়ল ওয়েম্বলি।

ধাক্কা সইয়ে ঘুরে দাঁড়ালো ইতালি। আক্রমণের তোপে ব্যতিব্যস্ত করে তুলল প্রতিপক্ষের রক্ষণকে। মিলল গোল। ম্যাচ নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় পেরিয়ে গড়ালো টাইব্রেকারে।

সেখানে জানলুইজি দোন্নারুমার নায়কোচিত পারফরম্যান্সে ইউরোপ সেরা হলো ইতালি।।

লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় ইতালি।

এক-দুই বছর পর নয়, ৫৩ বছর পর। ১৯৬৮ সালে সর্বশেষ ইউরো জিতেছিল ইতালি। এরপর ২০০০ এবং ২০১২ সালেও ইউরোর ফাইনাল খেলেছিল আজ্জুরিরা। কিন্তু ফিরতে হয়েছিল খালি হাতে।

এবার আর খালি হাতে না, ইংলিশদের কাঁদিয়ে ফিরছেন ট্রফি হাতে। টাইব্রেকারে ইংল্যান্ডকে কাঁদিয়ে ৫৩ বছর পর ইউরোর ট্রফিটা রোমে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আজ্জুরিরা।

কিছু বুঝে ওঠার আগেই গোল খেয়ে যেন স্তম্ভিত হয়ে পড়ে ইতালি। গুছিয়ে উঠে বল দখলে রেখে আক্রমণের চেষ্টা করতে থাকে তারা। কিন্তু ইংলিশদের জমাট রক্ষণে ডি-বক্সের বাইরে অধিকাংশ ভেস্তে যাচ্ছিল।

৩৫তম মিনিটে প্রথম উল্লেখযোগ্য শট নিতে পারেনি রেকর্ড ৩৩ ম্যাচের অপরাজিত পথচলায় ৮৬ গোল করা ইতালি।

ডি-বক্সের বাইরে থেকে ফেদেরিকো চিয়েসার নিচু শটটি পোস্টের একটু বাইরে দিয়ে যায়। বিরতির আগে আরেকটি হাফ-চান্স পায় তারা; এবার চিরো ইম্মোবিলের শট ব্লক করেন জন স্টোনস।

দুই-তৃতীয়াংশের বেশি সময় বল দখলে রেখে চাপ ধরে রাখলেও নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না ইতালি। ৬২তম মিনিটে প্রথমবার প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকের পরীক্ষা নেয় তারা। তিন ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে চিয়েসার নেওয়া শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন পিকফোর্ড।

পাঁচ মিনিট পরই স্বাগতিকদের স্তব্ধ করে দেয় আজ্জুরিরা। কর্নারে মার্কো ভেরাত্তির হেড পিকফোর্ড কোনোমতে ঠেকালেও বল হাতে রাখতে পারেননি, পোস্টে লেগে ফেরা বল গোলমুখ থেকে ছোট্ট টোকায় জালে পাঠান বোনুচ্চি।

ইউরোর ফাইনালে সবচেয়ে বেশি বয়সে গোল করলেন বোনুচ্চি (৩৪ বছর ৭১ দিন)।

গোল হজম করার পর খোলস ছেড়ে বের হয় ইংল্যান্ড। যদিও নির্ধারিত ৯০ মিনিটের বাকি সময়ে কোনো শটই নিতে পারেনি তারা। অতিরিক্ত সময়েও একইভাবে চলতে থাকে।

১০৩ মিনিটে ব্যবধান গড়ে দেওয়ার সুযোগ নষ্ট করেন বের্নারদেস্কি। বাঁ দিক থেকে ইনসিনিয়ের দারুণ ক্রসে পা ছোঁয়াতেই পারেননি বদলি নামা ফরোয়ার্ড। ৪ মিনিট পর বের্নারদেস্কির ফ্রি কিক দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ঠেকিয়ে ম্যাচ টাইেব্রকারে নেন পিকফোর্ড।সেখানেও দারুণ পারফরম্যান্স দেখালেন তিনি, তারপরও হাসতে পারলেন না। ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর বড় উৎসব করতে পারল না ইংল্যান্ডও।

টানা ৩৪ ম্যাচ অপরাজেয় পথচলায় ১৯৬৮ সালের পর আবারও ইউরোপ সেরার স্বাদ পেল ইতালি। মানচিনির ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া এক দল, যেন ওরা হারতে জানে না।

নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও ১-১ গোলে শেষ হয় খেলা।

টাইব্রেকারের গল্পটা অনেকটাই নির্ধারিত সময়ের লড়াইয়ের মতো। ইংল্যান্ড প্রথম দুই শটেই গোল পেল। বিপরীতে ইতালির দ্বিতীয় শট নিতে আসা আন্দ্রেয়া বেলোত্তির প্রচেষ্টা রুখে দেন জর্ডান পিকফোর্ড।

কিন্তু এরপর ইংল্যান্ড লক্ষ্যে পাঠাতে পারল না আর একটিও। ইতালির তিন ও চার নম্বর শটে জাল খুঁজে নেন বোনুচ্চি ও ফেদেরিকো বের্নারদেস্কি। জর্জিনিয়োর নেওয়া তাদের পঞ্চম শটও ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন পিকফোর্ড। তারপরও নায়ক হতে পারেননি তিনি।

টাইব্রেকারের কথা ভেবে মার্কাস র‌্যাশফোর্ড ও জ্যাডন স্যানচোকে শেষ মুহূর্তে বদলি নামিয়েছিলেন ইংলিশ কোচ।দুজনেই হতাশ করেছেন। র‌্যাশফোর্ড মারেন পোস্টে আর স্যানচো ও বুকায়ো সাকার শট রুখে দিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করেন দোন্নারুমা।

পুরো ম্যাচে ৬৬ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশে ১৯টি শট নেয় ইতালি, যার ছয়টি ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে অধিকাংশ সময় খোলসবন্দী হয়ে থাকা ইংল্যান্ড শট নেয় মাত্র ৬টি, যার দুটি লক্ষ্যে।

 

Related News
- Advertisment -

Popular News

error: Content is protected !!