সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নুর পরশ লাফিয়ে পড়ে ভারী আঘাত পেয়ে মারা গেছে। তার লাশের করা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন এ এফ এম মুশিউর রহমান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফারদিনের ভিসেরা প্রতিবেদনে কিছু পাওয়া যায়নি। ক্যামিক্যাল বা বিষ জাতীয় কোনও পদার্থের উপস্থিতি তার শরীরে নেই। মাদকের কোনও উপস্থিতি নেই।’
ফারদিনের মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সে লাফ দিয়ে পড়ে আঘাত পেয়ে মারা গেছে। তার শরীরের কোথায় কোথায় আঘাত ছিল তা আগেই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আমরা বলে দিয়েছি।’
ফারদিন লাফ দিয়ে মারা যাওয়ার কারণ হিসেবে এটাকে আত্মহত্যা বলা যাবে কি-না এমন প্রশ্নের তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া তো তেমন কোনও কারণ দেখছি না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ময়নাতদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ফারদিনের শরীরের আঘাত আঘাতের জায়গায় আছে। এটা পরিবর্তন হয়নি। তবে আঘাতের কারণ হয়তো পরিবর্তন হতে পারে। তার শরীরে আঘাতের বিষয়ে আমরা যা তথ্য আগে দিয়েছি, তা পরিবর্তন হয়নি। তবে সে কীভাবে আঘাত পেয়েছে এটা বলতে পারবে মামলার তদন্তকারী সংস্থা।’
এখানে উল্লেখ্য, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও ছায়া তদন্তকারী সংস্থা র্যাব ফারদিনের আত্মহত্যার কারণে উল্লেখ করেছে, ফারদিন নদীতে লাফ দিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছে।
এর আগে, ৪ নভেম্বর নিখোঁজ হন ফারদিন। এরপর ৭ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের লাশ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। পর দিন ৮ নভেম্বর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রাথমিক ময়নাতদন্ত শেষে ফারদিনের মাথার বিভিন্ন অংশে ও বুকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শেখ ফরহাদ।
সেদিন এই চিকিৎসক বলেন, ‘নিহত ফারদিনের মাথার পুরো অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া তার বুকে আঘাতের চিহ্ন আছে। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, এটি হত্যাকাণ্ড। কারণ, আঘাতের চিহ্নগুলো স্বাভাবিক না।’
উল্লেখ্য, ফারদিন নিখোঁজের পরদিন ৫ নভেম্বর রাজধানীর রামপুরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা কাজী নূর উদ্দিন। লাশ উদ্ধারের পর হত্যা মামলা করা হয়। এই ঘটনায় তার এক বান্ধবীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
ফারদিন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং ক্লাবেরও যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের নয়ামাটি এলাকার কাজী নুর উদ্দিনের ছেলে। থাকতেন ডেমরার কোনাপাড়া শান্তিবাগ এলাকায়। তিন ভাইয়ের মধ্যে ফারদিন সবার বড়।
লাফিয়ে পড়া ফারদিন ভারী আঘাতে মারা গেছে
Related News