মহেশখালীতে প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে রক মেলন
মহেশখালী উপজেলায় এ-ই প্রথম চাষ হচ্ছে বিদেশি ফল রক মেলন বা সাম্মাম। উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের শুকরিয়া পাড়া গ্রামের শিক্ষিত তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা নেজামুল করিম ইতিমধ্যে এ ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে সাফল্যের দেখা পেয়েছে।
রক মেলন বা Cantaloupe (ফুটি)।
জাতঃ বাঙ্গীজাতীয় এ ফল রক মেলন, সুইট মেলন, মাস্ক মেলন নামেও পরিচিত। এটি বিদেশি ফল, থাইল্যান্ড এবং সৌদি আরবে এর প্রচুর চাষ করা হয়। সৌদি আরবে এটি কে সাম্মাম বলা হয়।
ফলের ধরনঃ
ক) চামড়া হলুদ মসৃণ আবৃত, ভেতরের অংশ একদম আমাদের দেশের বাঙ্গী বা তরমুজের মতো।
খ) চামড়ার অংশ খশখশে এবং চামড়ার ভেতরে অংশে হালকা হলুদ এবং বাদামি বর্ণের।
রোপনের সময়ঃ সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর।
মাটিঃ বেলে মাটি, বেলে-দোআঁশ মাটি। মাটি অবশ্যই ঝুরঝুরে হতে হবে, যাতে মাটির তলদেশ পর্যন্ত মাটি পৌঁছাতে পারে। সেই মাটিতে যাতে পানি না জমে, সে-ই ব্যবস্হা রাখতে হবে।
বীজ বপনঃ ছাঁদ বাগানের জন্য ১০-১২ ইঞ্চি টবে বীজ বপন করতে হবে। মাটিতে যথেষ্ট পরিমাণ জৈবসার এবং জৈব উপাদান আব্যশক
বাণিজ্যিকভাবে জমিতে করলে মাটিকে উঁচু করে বীজ বপন করতে হবে এবং সেচের জন্য ড্রেন ব্যবস্থা রাখতে হবে।
চারা থেকে চারার দূরত্ব হবে দেড় থেকে ২ (দুই) ফুট।
চাষ ব্যবস্হাঃ জমিতে চারা অবশ্যই উঁচুতে থাকতে হবে এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকতে হবে। যাতে অতিরিক্ত পানি না জমে। মাটির উপরের অংশ অবশ্যই মালচিং করতে হবে।
বীজ অঙ্কুরোদগমঃ ৫-১০ দিনের মধ্যে অনেক সময় তাপমাত্রা কম হলে ১২-১৫ দিন সময় ও লাগে।
ফুল এবং ফলঃ বীজ
অঙ্কুরোদগমের পর থেকে ১৫-২০ দিনের মধ্যে ফুল আসে এবং ৩০-৪০ দিনের মধ্যে ফল পাওয়া যায়।
সার সুপারিসঃ মাটি তৈরি করার সময় জৈবসার এবং জৈব উপাদান ভালো ভাবে মিশ্রিত করতে হবে এবং লক্ষ্য রাখতে হবে আপনার মাটিতে পর্যাপ্ত পরিমানে নাট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম এবং সালফার এর উপস্থিতি আছে কিনা প্রয়োজনে সার প্রয়োগের পূর্বে মাটি পরীক্ষা করে নিতে হবে।
সেচ ব্যবস্হাপনাঃ চারা অঙ্কুরোদগমের পর থেকে ২-৩ দিন পর পর হালকা সেচ দিতে হবে এবং কোন অবস্থাতেই সেচ এমন দেয়া যাবে না যে পাত্রে অথবা চারা নিচে অনেক পানি জমে থাকে। ফুল আসার সাথে সাথে সেচ ব্যবস্থা প্রতি একদিন পর পর দিতে হবে।
অতিরিক্ত পরিচর্যাঃ যেহতু এটি একটি লতা জাতীয় গাছ এবং এর লতা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় তাই এর লতা ধারণের জন্য মাচা পদ্ধতি বা মাটিতে খড়কুটো বিছিয়ে দিয়ে দিতে হবে।
পোকামাকড় ও রোগবালাইঃ এই ফলে হলুদ মাছি পোকা এসে গাছের পাতা ফুটো করে দেয় কান্ড এবং পাতার রস চুষে রস টেনে গাছের ক্ষতি করে এবং ফল আসার পরে ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ হয় তাতে গাছের ফল পচা রোগের সৃষ্টি হয় এবং ফল পচে যায়।
সমাধানঃ জৈব বালাইনাশক নিতে হবে না পেলে, নিকটস্থ ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার সাথে পরামর্শ করে ব্যবস্হা নিতে হবে।
ফলনঃ এই ফল গাছের সঠিকভাবে চাষাবাদ এবং নিয়মিত ফুলের পরাগায়ন কররর, ১টি গাছ থেকে ৮ থেকে ১২ টি পর্যন্ত ফল পাওয়া সম্ভব।
ফলের আকৃতি গোলাকার হবে এবং এক একটি ফল ওজনে ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম অনেক ক্ষেত্রে এর চেয়ে ও বেশী ওজন হতে পারে।