HomeIslamicবছরের যেসব দিনে রোজা রাখলে বেশি নেকি হয়

বছরের যেসব দিনে রোজা রাখলে বেশি নেকি হয়

বছরের যেসব দিনে রোজা রাখলে বেশি নেকি হয় সে বিষয়ে আজকে আলোচনা করবো। ইসলাম ধর্মে রোজা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা শুধু রমজান মাসেই নয়, বরং বছরের নির্দিষ্ট দিনগুলোতেও রাখা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। এই রোজাগুলো রাখার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে আরও বেশি সাওয়াব অর্জন করা যায়। নিচে বছরের বিভিন্ন সময়ের বিশেষ রোজার দিন এবং তাদের ফজিলত তুলে ধরা হলো।

১. আরাফার দিন (৯ই জ্বিলহজ)

আরও পড়ুন – যিলহজ্ব মাসের ৫টি বিশেষ আমল

আরাফার দিন রোজা রাখা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। এটি হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন।
ফজিলত:
প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন,
“আরাফার দিনের রোজা পূর্ববর্তী এক বছর এবং পরবর্তী এক বছরের গুনাহ মাফ করে।”
(মুসলিম: ১১৬২)

২. আশুরার দিন (১০ই মুহাররম)

মুহাররম মাস ইসলামের চারটি পবিত্র মাসের একটি। বিশেষত ১০ই মুহাররমের দিন রোজা রাখা সুন্নত।
ফজিলত:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,
“আশুরার দিনের রোজা একটি বছরের গুনাহ মাফের কারণ হবে।”
(মুসলিম: ১১৬২)

এছাড়া, ১০ই মুহাররমের সাথে ৯ই বা ১১ই মুহাররমের রোজাও রাখা উত্তম।

৩. শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা

রমজান মাসের পরে শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা মুস্তাহাব।
ফজিলত:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
“যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখে এবং শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখে, সে যেন পুরো বছর রোজা রাখার সাওয়াব পায়।”
(মুসলিম: ১১৬৪)

৪. শাবান মাসে রোজা

শাবান মাস রমজানের প্রস্তুতির মাস। রাসূলুল্লাহ (সা.) এই মাসে প্রচুর নফল রোজা রাখতেন।
ফজিলত:
আয়েশা (রা.) বলেন,
“আমি কখনো রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে শাবান মাস ছাড়া আর কোনো মাসে এত বেশি রোজা রাখতে দেখিনি।”
(বুখারি: ১৯৬৯)

৫. সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজা

সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার দিন রোজা রাখা সুন্নত।
ফজিলত:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
“সোম ও বৃহস্পতিবার দিনে আমলগুলো আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়, তাই আমি চাই আমার আমলগুলো পেশ করা হোক, যখন আমি রোজাদার থাকি।”
(তিরমিজি: ৭৪৭)

৬. বাইরের দিনগুলো (১৩, ১৪, ১৫ তারিখ)

হিজরি মাসের প্রতিটি চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪, এবং ১৫ তারিখে রোজা রাখা উত্তম।
ফজিলত:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,
“চাঁদের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখে রোজা রাখা পুরো মাস রোজা রাখার সমান।”
(নাসাঈ: ২৪৪০)

৭. জুমার দিনের সাথে এক দিন আগের বা পরের রোজা

জুমার দিনে রোজা রাখা একা একা মাকরুহ। তবে এটি বৃহস্পতিবার বা শনিবারের রোজার সঙ্গে মিলিয়ে রাখলে সাওয়াব হয়।

৮. দাওয়ুদের (আ.) এর রোজা

দাওয়ুদের রোজা ইসলামের সর্বোত্তম রোজার একটি পদ্ধতি। এক দিন রোজা রাখা এবং এক দিন বিরতি দেওয়া।
ফজিলত:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,
“আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় রোজা হলো দাওয়ুদের রোজা।”
(বুখারি: ৩৪২০)

৯. জিলহজ মাসের প্রথম ৯ দিন

জিলহজ মাসের প্রথম ৯ দিনে রোজা রাখা বিশেষ ফজিলতপূর্ণ।
ফজিলত:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
“এই দশ দিনে করা নেক আমল আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়।”
(বুখারি: ৯৬৯)

বছরের বিশেষ দিনগুলোতে রোজা রাখা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। এটি মানুষের ইবাদতকে পরিপূর্ণ করে এবং জান্নাতের পথে এগিয়ে যেতে সহায়তা করে। প্রতিটি নফল রোজার বিশেষ ফজিলত রয়েছে, যা আমাদের গুনাহ মাফের পাশাপাশি আখিরাতের সাওয়াব অর্জনে সহায়তা করে।

আপনারা যদি আরও ইসলামিক বিষয় নিয়ে জানতে চান, তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

Related News

Popular News

error: Content is protected !!