এ.কে.রিফাতঃ দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে প্রেমিকার আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে তথাকথিত প্রেমিকসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ২৭ অক্টোবর (বুধবার) রাতে দ্বীপের কালারমারছড়া ইউনিয়নের ০৭ নং ওয়ার্ড অফিসপাড়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কালারমরছাড়ার ০৭ নং ওয়ার্ডের অফিসপাড়া এলাকার মোহাম্মদ রফিকের পুত্র মহাম্মদ আলমগীর (২২) এবং একই ওয়ার্ডের মোহাম্মদ শাহ ঘোনা নামক এলাকার মোহাম্মদ হোছাইনের পুত্র মোঃ আনোয়ার (২৬)।
মহেশখালী থানার ওসি (তদন্ত) আশিক ইকবাল গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ভুক্তভোগীর বক্তব্য অনুযায়ী পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়ার ০৭ নং ওয়ার্ড অফিস পাড়ার দরিদ্র পরিবারের ১৫ বছরের এক কিশোরীর সঙ্গে আনুমানিক ৬ মাস আগে একই এলাকার মোঃ আলমগীরের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের সম্পর্কের সুবাদে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে কথিত প্রেমিক আলমগীর ওই কিশোরীকে গত ১১ অক্টোবর চকরিয়া উপজেলার বদরখালী বাজারে অবস্থিত একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যায়। নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে আলমগীর মেয়েটির সাথে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হয় এবং তা কিশোরীর অজান্তে অনেকটা গোপনে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারন করে রাখেন।
কয়েকদিন পর সেদিনের ভিডিও চিত্রটি আলমগীরের কথিত বন্ধু মোঃ আনোয়ারকে দেখায়, পরে সেই ভিডিওটি আনোয়ারও তার মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ করে রাখেন।
পরে কিশোরীকে উক্ত ভিডিও চিত্রের ভয় দেখিয়ে কথিত প্রেমিকের বন্ধু মেয়েটিকে কুপ্রস্তাব দেয় এবং উক্ত কুপ্রস্তাবে মেয়েটি রাজি না হলে ধর্ষনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে নিজের ইজ্জত নিয়ে টানাটানির ভয়ে মেয়েটি তার কথিত প্রেমিকের বন্ধুর কুপ্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়।
এরপর তারা দু’জনে মিলে বিভিন্ন সময় উক্ত কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে।
পুলিশ আরও জানায, গ্রেপ্তারকৃত দুইজনের মানসিক ও শারীরিক চাপ সহ্য করতে না পেরে একপর্যায়ে মেয়েটি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরিশেষে উক্ত ধর্ষনের ঘটনাটি তার মাকে খুলে বললে- মেয়েটির মা গত ২৬ অক্টোবর মহেশখালী থানায় মেয়েটির বাদী হয়ে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন সংশোধনী ও ২০১২ সালের পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে কথিত প্রেমিক আলমগীর ও তার বন্ধু আনোয়ারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।
উক্ত ঘটনার বিষয়ে মহেশখালী থানার অফিসার ইনর্চাজ মোঃ আব্দুল হাই বলেন, বিষয়টি অত্যান্ত নিষ্টুরতম এবং গুরুতর অপরাধ। আমি এজহার হাতে পাওয়ার সাথে সাথেই মামলা গ্রহণ করেছি এবং মামলা দায়েরের পরদিনই পুলিশ অভিযান চালিয়ে আলমগীর ও আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।
এছাড়া গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতেও পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে এবং সামাজিক অপরাধ দমনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে মহেশখালী থানা পুলিশ।