ইসলামে অহংকার ও বড়াই এর পরিণামঃ
অহংকার ও বড়াই মানবাত্মার জন্য খুবই ক্ষতিকর ও মারাত্মক ব্যাধি, যা একজন মানুষের নৈতিক চরিত্রকে শুধু কলুষিতই করে না বরং তা একজন মানুষকে হেদায়াত ও সত্যের পথ থেকে দূরে সরিয়ে ভ্রষ্টতা ও গোমরাহির পথের দিকে নিয়ে যায়। যখন কোনো মানুষের অন্তরে অহংকার ও বড়াইর অনুপ্রবেশ ঘটে, তখন তা তার জ্ঞান, বুদ্ধি ও ইরাদার ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে এবং তাকে নানাবিধ প্রলোভন ও প্ররোচনার মাধ্যমে খুব শক্ত হস্তে টেনে নিয়ে যায় ও বাধ্য করে সত্যকে অস্বীকার ও বাস্তবতাকে প্রত্যাখ্যান করতে।
আর একজন অংহকারী সবসময় চেষ্টা করে হকের নিদর্শনসমূহকে মিটিয়ে দিতে। অতঃপর তার নিকট সজ্জিত ও সৌন্দর্য মণ্ডিত হয়ে ওঠে কিছু বাতিল, ভ্রান্ত, ভ্রষ্টতা ও গোমরাহি যার কোনো বাস্তবতা নেই। ফলে সে এ সবেরই অনুকরণ করতে থাকে এবং গোমরাহিতে নিপতিত থাকে। এ সবের সাথে আরও যোগ হবে, মানুষ সে যত বড়ই হোক না কেন, তাকে সে নিকৃষ্ট মনে করবে, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে তাকে অপমান করবে।
কিবিরের আভিধানিক অর্থ:
কিবির অর্থ: বড়ত্ব, অহংকার ও বড়াই ইত্যাদি। অনুরূপভাবে الكبرياء অর্থও বড়ত্ব, বড়াই, অহংকার।
ইসলামী পরিভাষায় কিবিরের সংজ্ঞা:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই স্বীয় হাদীসে কিবিরের সংজ্ঞা বর্ণনা করেন।
আব্দুল্লাহ ইবন মাসুদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لا يْدخُلُ الجَنةََّ مَنْ كَانَ فِي قَلْبهِِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ كبِرٍ قَالَ رَجُلٌ: إِنَّ الرَّجُلَ يُحبُِّ أَنْ يَكُونَ ثَوْبُهُ حسَنًا، وَنْعُلُه حَسَنَةً. قَالَ: إِنَّ الله جَميِلٌ يُحبُ الجَمَالَ، الْكبِر بَطَرُ الحَقِّ، وَغَمْطُ الناَّسِ»
“যার অন্তরে একটি অণু পরিমাণ অহংকার থাকে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বললে, এক লোক দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল, কোনো কোনো লোক এমন আছে, সে সুন্দর কাপড় পরিধান করতে পছন্দ করে, সুন্দর জুতা পরিধান করতে পছন্দ করে, এসবকে কি অহংকার বলা হবে? উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর তা‘আলা নিজেই সুন্দর, তিনি সুন্দরকে পছন্দ করেন। (সুন্দুর কাপড় পরিধান করা অহংকার নয়) অহংকার হলো, সত্যকে গোপন করা এবং মানুষকে নিকৃষ্ট বলে জানা।
মানুষ যে সব জিনিস নিয়ে অহংকার করেঃ
মানুষ বিভিন্ন জিনিস নিয়ে অহংকার করে থাকে। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে বিভিন্ন ধরনের যোগ্যতা ও গুণ দিয়ে সৃষ্টি করেন। কারো সৌন্দর্য আছে কিন্তু ধন সম্পদ নেই, সে সৌন্দর্য নিয়ে অহংকার করে, আবার কেউ আছে তার সম্পদ আছে, কিন্তু সৌন্দর্য নেই, সে তার সম্পদ নিয়ে বড়াই বা অহংকার করে। এভাবে এক একজন মানুষ এক একটি নিয়ে অহংকার করে।
এক. ধন-সম্পদ:
মানুষ আল্লাহর দেওয়া ধন-সম্পদ নিয়ে অহংকার বা বড়াই করে থাকে। তারা মনে করে ধন-সম্পদ লাভ তাদের যোগ্যতার ফসল, তারা নিজেরা তাদের যোগ্যতা দিয়ে ধন-সম্পদ উপার্জন করে থাকে। সুতরাং যাদের ধন-সম্পদ থাকে না তারা অযোগ্য ও অক্ষম। আল্লাহ তা‘আলা কুরআন করীমে বলেন..
﴿إِنَّ قَٰرُونَ كَانَ مِن قَوۡمِ مُوسَىٰ فَبَغَىٰ عَلَيۡهِمۡۖ وَءَاتَيۡنَٰهُ مِنَ ٱلۡكُنُوزِ مَآ إِنَّ مَفَاتِحَهُۥ لَتَنُوٓأُ بِٱلۡعُصۡبَةِ أُوْلِي ٱلۡقُوَّةِ إِذۡ قَالَ لَهُۥ قَوۡمُهُۥ لَا تَفۡرَحۡۖ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلۡفَرِحِينَ ٧٦ وَٱبۡتَغِ فِيمَآ ءَاتَىٰكَ ٱللَّهُ ٱلدَّارَ ٱلۡأٓخِرَةَۖ وَلَا تَنسَ نَصِيبَكَ مِنَ ٱلدُّنۡيَاۖ وَأَحۡسِن كَمَآ أَحۡسَنَ ٱللَّهُ إِلَيۡكَۖ وَلَا تَبۡغِ ٱلۡفَسَادَ فِي ٱلۡأَرۡضِۖ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلۡمُفۡسِدِينَ﴾ [القصص:76-77[.
“নিশ্চয় কারূন ছিল মূসার কাওমভূক্ত। অতঃপর সে তাদের ওপর ঔদ্ধত্য প্রকাশ করে। অথচ আমি তাকে এমন ধনভাণ্ডার দান করেছিলাম যে, নিশ্চয় তার চাবিগুলো একদল শক্তিশালী লোকের ওপর ভারী হয়ে যেত। স্মরণ কর, যখন তার কাওম তাকে বলল, ‘দম্ভ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ দাম্ভিকদের ভালবাসেন না’। আর আল্লাহ তোমাকে যা দান করেছেন তাতে তুমি আখিরাতের নিবাস অনুসন্ধান কর। তবে তুমি দুনিয়া থেকে তোমার অংশ ভুলে যেয়ো না। তোমার প্রতি আল্লাহ যেরূপ অনুগ্রহ করেছেন তুমিও সেরূপ অনুগ্রহ কর। আর যমীনে ফাসাদ করতে চেয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ ফাসাদকারীদের ভালবাসেন না”। [সূরা আল-কাসাস, আয়াত: ৭৬,৭৭]
দুই. ইলম বা জ্ঞান:
অহংকারের অন্যতম একটি কারণ হলো, ইলম বা জ্ঞান। একটি কথা মনে রাখতে হবে, আলিম, ওলামা, তালিবে ইলম ও তথাকথিত পীর মাশাইখদের মধ্যে অহংকার খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কারণ, শয়তান তাদের পিছনে লেগে থাকে, চেষ্টা করে কীভাবে তাদের ধোকায় ফেলা যায়। এ কারণেই বর্তমানে আমরা দেখতে পাই, আলিমদের মধ্যে ফিতনা-ফ্যাসাদ, ঝগড়া-বিবাদ ও মতবিরোধ খুব বেশি। একজন আলিম মনে করে, ইলমের দিক দিয়ে সেই হলো পরিপূর্ণ ও স্বয়ং সম্পন্ন, তারমত এত বড় জ্ঞানী জগতে আর কেউ নেই। অনেক সময় দেখা যায়, একজন আলিম অন্য আলিমকে একেবারেই মূল্যয়ন করে না এবং নিজেকে মনে করে বড় আলিম, আর অন্যদের সে জাহেল ও নিকৃষ্ট মনে করে। এ ধরনের স্বভাব একজন আলেমের জন্য কত যে জঘন্য তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
একজন মানুষের মধ্যে যখন সত্যিকার ইলম বা জ্ঞান থাকবে, তখন সে সর্বাধিক বিনয়ী হবে এবং আল্লাহকেই ভয় করতে থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿إِنَّمَا يَخۡشَى ٱللَّهَ مِنۡ عِبَادِهِ ٱلۡعُلَمَٰٓؤُاْۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ غَفُورٌ﴾ [فاطر :]
“বান্দাদের মধ্যে কেবল জ্ঞানীরাই আল্লাহকে ভয় করে। নিশ্চয় আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, পরম ক্ষমাশীল। [সূরা ফাতির, আয়াত: ২৮]
তিন. আমল ও ইবাদত:
অনেকেই তাদের ইবাদত ও আমল নিয়ে গর্ব ও অহংকার করে। সে মনে করে মানুষের কর্তব্য হলো, তারা তাকে সম্মান করবে, সব কাজে তাকে অগ্রাধিকার দিবে এবং তার তাকওয়া, তাহারাত ও বুজুর্গি নিয়ে বিভিন্নভাবে আলোচনা করবে। আর সে মনে করে সব মানুষ ধ্বংসের মধ্যে আছে, শুধু সে একাই নিরাপদ। এ কারণে সে মাঝে মধ্যে বলে থাকে সব মানুষ ধ্বংস হয়ে গেছে। অথচ, কোনো একজন মানুষের জন্য সবাই ধ্বংস হয়ে গেছে বলা কোনো ক্রমেই উচিৎ নয়।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إذَا قَالَ الرَُّجُل هَلَك الناَّسُ فَهُوَ أَْهلَكُهُمْ»
“যখন কোনো লোক বলে মানুষ ধ্বংস হয়ে গেছে, মূলত: সেই তাদের মধ্যে সবচেয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত ব্যক্তি।
আল্লামা খাত্তাবী রহ. তার আযলা কিতাবে বর্ণনা করেন, আবদুল্লাহ ইবন মুবারক খোরাসানে পৌছলে, মানুষের মুখে শুনতে পেলেন, এখানে একজন লোক আছে যিনি তাকওয়া ও পরহেজগারিতে প্রসিদ্ধ ও বিখ্যাত। এ কথা শোনে আব্দুল্লাহ ইবন মুবারক রহ. তাকে দেখতে গেলেন। তিনি তার ঘরে প্রবেশ করেন, কিন্তু লোকটি তার দিকে একটুও তাকাল না এবং তার প্রতি বিন্দু পরিমাণও ভ্রুক্ষেপ করেনি। তার অবস্থা দেখে আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক কাল ক্ষেপণ না করে তার ঘর থেকে বের হয়ে চলে আসেন। তারপর তার সাথীদের থেকে এক লোক তাকে বলল, তুমি কি জান এ লোকটি কে? সে বলল, না। তখন সে বলল, এ হলো আমীরুল মুমিনীন আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক, এ কথা শোনে লোকটি হতভম্ব ও নির্বাক হলো এবং দৌড়ে আব্দুল্লাহ ইবন মুবারক রহ.-এর নিকট গেল, তার নিকট ক্ষমা চাইল এবং তার আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করল। তারপর বলল, হে আবু আব্দুর রহমান! তুমি আমাকে ক্ষমা কর এবং উপদেশ দাও!
আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক বলল, যখন তুমি ঘর থেকে বের হও, তখন যাকেই দেখ, মনে করবে সে তোমার থেকে উত্তম, আর তুমি তাদের চেয়ে অধম ও নিকৃষ্ট। তাকে এ উপদেশ দেওয়ার কারণ হলো, লোকটি নিজেকে বড় মনে করত এবং অহংকার করত। এ ছিল ধোঁকায় নিমজ্জিত একজন অহংকারীর অবস্থা।
চার. বংশ:
কতক লোক আছে তারা উচ্চ বংশীয় হওয়ার কারণে অন্যদের ওপর বংশ নিয়ে গর্ব ও অহংকার করে। সে অহংকার বসত মানুষের সাথে মিশতে চায়না, তাদের সাথে মিশতে অপছন্দ করে এবং মানুষকে ঘৃণা করে। অনেক সময় অবস্থা এমন হয়, তার মুখ দিয়েও অহংকার প্রকাশ পায়। ফলে সে মানুষকে বলতে থাকে, তুমি কে? তোমার পিতা কে? তুমি আমার মতো লোকের সাথে কথা বলছ?!!
ইসলামের আদর্শ হলো, বংশ মর্যাদা না থাকার কারণে কাউকে হেয় প্রতি-পন্ন করা যাবে না। একজন লোক সে যে বংশেরই হোক না কেন, তার পরিচয় ঈমান ও আমলের মাধ্যমে। এ কারণেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট হাবশী গোলাম বেলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর মূল্য মক্কার কাফির সরদার আবু জাহল থেকে বেশি। একমাত্র ঈমানের কারণে হাবশী গোলাম বিলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে খলিফাতুল মুসলিমীন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার নিজের সরদার বলে আখ্যায়িত করেন।
ইসলামে কারোর ওপর কারো কোনো প্রাধান্য নেই একমাত্র প্রাধান্য হলো, তাকওয়ার ভিত্তিতে। সুতরাং একজন উচ্চ বংশের লোক তার মধ্যে যদি তাকওয়া না থাকে, তা হলে তার উচ্চ বংশীয় মর্যাদা কোনো কাজে আসবে না। আর একজন লোক সে নিম্ন বংশের, কিন্তু তার মধ্যে তাকওয়া আছে, তাহলে সে তার তাকওয়ার কারণে উচ্চ মর্যাদার অধিকারী হবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنَّا خَلَقۡنَٰكُم مِّن ذَكَرٖ وَأُنثَىٰ وَجَعَلۡنَٰكُمۡ شُعُوبٗا وَقَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوٓاْۚ إِنَّ أَكۡرَمَكُمۡ عِندَ ٱللَّهِ أَتۡقَىٰكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٞ﴾ [الحجرات: 13[
“হে মানুষ, আমি তোমাদেরকে এক নারী ও এক পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি আর তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি। যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া সম্পন্ন। নিশ্চয় আল্লাহ তো সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত”। [সূরা আল-হুজরাত, আয়াত: ১৩]
অহংকারীর শাস্তিঃ
একজন অহংকারীকে আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই শাস্তি দেবেন। আল্লাহ তা‘আলা তার শাস্তি দুনিয়াতেও দেবেন এবং আখেরাতেও দেবেন।
দুনিয়াতে অহংকারীর শাস্তি:
১. একজন অহংকারীকে তার চাহিদার বিপরীত দান করার মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হয়। যেমন, সে মানুষের নিকট চায় সম্মান কিন্তু মানুষ তাকে বিপরীতটি উপহার দেয়, অর্থাৎ ঘৃণা করে।
অহংকারীকে লোকেরা নিকৃষ্ট মানুষ মনে করে এবং ঘৃণা করে। এটি হলো, একজন অহংকারীর জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে বিশেষ শাস্তি। দুনিয়ার চিরন্তন নিয়মই হলো, অহংকারীকে কেউ ভালো চোখে দেখে না, সবাই তাকে ঘৃণা করে। আর যে ব্যক্তি অহংকার করে, নিজেকে বড় মনে করে আল্লাহ তা‘আলা তাকে ছোট করে, আর যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য বিনয় ও নম্রতা অবলম্বন করে, আল্লাহ তা‘আলা তার মর্যাদাকে বৃদ্ধি করে। আর যে ব্যক্তি হকের বিপক্ষে বড়াই করে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে অসম্মান ও অপমান করে।
২. চিন্তা-ফিকির, উপদেশ গ্রহণ করা ও আল্লাহর আয়াতসমূহ হতে নছিহত অর্জন করা হতে বঞ্চিত হয়।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿سَأَصۡرِفُ عَنۡ ءَايَٰتِيَ ٱلَّذِينَ يَتَكَبَّرُونَ فِي ٱلۡأَرۡضِ بِغَيۡرِ ٱلۡحَقِّ وَإِن يَرَوۡاْ كُلَّ ءَايَةٖ لَّا يُؤۡمِنُواْ بِهَا وَإِن يَرَوۡاْ سَبِيلَ ٱلرُّشۡدِ لَا يَتَّخِذُوهُ سَبِيلٗا وَإِن يَرَوۡاْ سَبِيلَ ٱلۡغَيِّ يَتَّخِذُوهُ سَبِيلٗاۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ كَذَّبُواْ بَِٔايَٰتِنَا وَكَانُواْ عَنۡهَا غَٰفِلِينَ ١٤٦﴾ ]الأعراف: 146[
“যারা অন্যায়ভাবে যমীনে অহঙ্কার করে আমার আয়াতসমূহ থেকে তাদেরকে আমি অবশ্যই ফিরিয়ে রাখব। আর তারা সকল আয়াত দেখলেও তাতে ঈমান আনবে না এবং তারা সঠিক পথ দেখলেও তাকে পথ হিসাবে গ্রহণ করবে না। আর তারা ভ্রান্ত পথ দেখলে তা পথ হিসাবে গ্রহণ করবে। এটা এ জন্য যে, তারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে এবং সে সম্পর্কে তারা ছিল গাফেল।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৪৬]
আল্লামা সাদী রহ. বলেন, আমার আয়াতসমূহ হতে তাদের আমি ফিরিয়ে রাখবো এ কথার অর্থ হলো, আমি তাদের আমার আয়াত হতে উপদেশ গ্রহণ করতে এবং আমার আয়াতের মর্মার্থ বুঝা হতে ফিরিয়ে রাখবো।
অর্থাৎ যারা আমার বান্দাদের ওপর অহংকার করে, হকের বিরুদ্ধাচরণ করে ও যারা হক নিয়ে যারা আসছে, তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, আমি তাদের আমার আয়াতসমূহ থেকে উপদেশ গ্রহণ করা হতে বিরত রাখবো। আর যারা এ ধরনের গুণে গুণান্বিত হবে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে অনেক কল্যাণ হতে বঞ্চিত ও অপমান অপদস্থ করবে। আল্লাহর আয়াতসমূহ হতে যা তার উপকারে আসবে তা হতে তাকে ফিরিয়ে রাখা হবে। বরং, অনেক সময় অবস্থা এমন হবে, তার নিকট সব কিছুর বাস্তবতা উলট পলট হয়ে যাবে। তখন সে ভালোকে খারাপ জানবে আর খারাপকে ভালো জানবে।
[…] হাদিসে […]
[…] গান বাজনা সাধারণ মানুষের কাছে ইসলাম সম্পর্কে বিরূপ ধারণার জন্ম দিচ্ছে বলে জানা […]
[…] থেকে খৃষ্টজগৎ প্রতি বছর মহাসমারোহে “এপ্রিল ফুল” তথা এপ্রিলের বোকা উৎসব পালন করে […]
[…] ইসলামে অহংকারের পরিনতি কি? […]